— ফাইল চিত্র।
টানাপড়েনের হরিয়ানায় এ বার ভাঙন ধরল প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালার দল জননায়েক জনতা পার্টি (জেজেপি)-তে। দলের তিন বিধায়ক, দেবেন্দ্র সিংহ বাবলি, যোগীরাম শিহগ এবং রামনিবাস সুরজখেড়া শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের প্রতি সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে যোগীরাম এবং রামনিবাস গত সপ্তাহেই লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
গত ১০ বছর ধরে হরিয়ানায় বিজেপি ক্ষমতাসীন। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা আঁচ করে মনোহরলাল খট্টরকে সরিয়ে গত মার্চে সাইনিকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সে সময়েই লোকসভার আসন বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে হরিয়ানায় এনডিএ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যায় দুষ্মন্তের জেজেপি। এর পর থেকেই নির্দল বিধায়কদের ভরসায় সরকার বাঁচিয়ে রেখেছেন সাইনি।
এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার সরকার-সমর্থক তিন নির্দল বিধায়ক— রণধীর গোলান (পান্ডুরি), ধর্মপাল গোন্ডার (নিলোখেরি) এবং সোমবীর সিংহ সঙ্গওয়ান (দাদরি) প্রকাশ্যে সাইনির উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে কংগ্রেস শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তার পর থেকেই নতুন করে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে হরিয়ানায়। দলে ভাঙনের আঁচ পেয়েই দুষ্মন্ত শুক্রবার বলেন, ‘‘বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা হলে আমরা কংগ্রেসের পাশে থাকব। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেব।’’
হরিয়ানার রাজ্যপাল বন্দারু দত্তাত্রেয়কে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে সাইনি সরকারকে গরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেওয়ার জন্যেও দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতৃত্ব অবিলম্বে বিধানসভা ভেঙে দিয়ে হরিয়ানায় নতুন করে বিধানসভা ভোটের দাবি জানিয়েছে।
আগামী অক্টোবরে হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস মনে করছে, আর পাঁচ-ছ’মাসের জন্য সাইনি সরকার ফেলে নতুন সরকার গড়ার প্রচেষ্টায় আখেরে লাভ হবে না। বরং সেখানে লোকসভায় কংগ্রেস ভাল ফল করলে বিধানসভায় বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাবে। তা ছাড়া, বিধানসভা নির্বাচন হতে যে হেতু ছ’মাসের কম সময় বাকি, তাই নতুন করে সরকার গড়ার সুযোগ কংগ্রেসের পক্ষে পাওয়া সম্ভব নয়। উল্টে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
আর সে ক্ষেত্রে পদ্মশিবির সহানুভূতির ভোট পেতে পারে বলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশঙ্কা। সে কারণেই বিধানসভা ভেঙে নতুন করে ভোটের দাবি জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফায় সে রাজ্যের ১০টি লোকসভা আসনের সবগুলিতে ভোটগ্রহণ হবে। সেখানে মূল লড়াই বিজেপি, কংগ্রেস-আম আদমি পার্টি (আপ) জোট এবং জেজেপির মধ্যে।