ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ক্ষমতার চূড়ান্ত হস্তান্তরে এখনও দু’মাসেরও বেশি বাকি। কিন্তু ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ টিম এ সপ্তাহেই হোয়াইট হাউসে পৌঁছে কাজ শুরু করে দেবে ঠিক করেছিল। ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে সেটাই দস্তুর। কিন্তু বাদ সেধেছে টিম-ট্রাম্প।
আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, হোয়াইট হাউসের জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ)-র প্রধান এমিলি মারফি একটি চিঠিতে সই করতে অস্বীকার করছেন। সেই চিঠিটি সই হলেই কয়েক লক্ষ ডলারের ‘অন্তর্বর্তিকালীন’ তহবিল চলে আসবে ভাবী প্রেসিডেন্টের কর্মীদের হাতে। তা ছাড়া, হোয়াইট হাউসের বেশ কিছুটা অংশে ভাবী প্রেসিডেন্টের কর্মীদের যাতায়াতের অনুমতিও দেওয়া থাকে এই চিঠিতে। যা হাতে পেয়ে হোয়াইট হাউসকে বাইডেন-পরিবারের থাকার ও কাজ করার জন্য তৈরি করবেন বিশেষ টিমের সদস্যেরা। হোয়াইট হাউস শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন নয়, তাঁর দফতরও বটে।
সাধারণত ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জিএসএ প্রধান ওই বিশেষ চিঠিতে সই করেন। কিন্তু বাইডেন ম্যাজিক সংখ্যা পেরিয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরেও এমিলি চিঠিতে সই করেননি বলে সংবাদমাধ্যমের খবর। ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ এমিলির এই পদক্ষেপকে পরোক্ষে ট্রাম্পের বার্তা বলেই মনে করছেন হোয়াইট হাউস-ঘনিষ্ঠ কূটনীতিকেরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে জিএসএ-র মুখপাত্র প্যামেলা পেনিংটন শুধু বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কিছু বোঝা যাচ্ছে না। প্রশাসন যে ভাবে কাজ করার, করছে।’’
শুধু ট্রাম্প প্রশাসনই নয়, রিপাবলিকান দলের তরফ থেকেও বাইডেনের জয়কে মেনে নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। ব্যতিক্রম শুধু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র। শনিবার সকালে নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেই বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে ফোন করে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বুশ। তার পরে বাইডেন উইলমিংটনে ‘ঐক্যের বার্তা’ দিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার পরে একটি বিবৃতি জারি করে বুশ বলেন, ‘‘এই দেশাত্ববোধক বার্তার জন্য বাইডেনকে আমি অভিনন্দন জানিয়েছি। আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ফারাক থাকতে পারে। কিন্তু আমি জানি বাইডেন মানুষটি খুবই ভাল এবং দেশ পরিচালনা করার এই সুযোগ তিনি হারাবেন না।’’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে বারবার হুমকি দিচ্ছেন, তাতেও রিপাবলিকান শিবিরের একটা বড় অংশের মদত রয়েছে খবর।
সরকারি ভাবে, ভোটের ফল শনিবারে যা ছিল, এখনও সেখানেই থমকে রয়েছে। অর্থাৎ, বাইডেন পেয়েছেন ২৭৯টি ইলেক্টোরাল ভোট, আর ট্রাম্প ২১৪টি। আরিজ়োনা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং আলাস্কায় ভোটগণনা এখনও শেষ হয়নি বলেই জানাচ্ছে আমেরিকার অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম। তবে দু’-একটিতে দাবি করা হয়েছে, আরিজ়োনা জিতে নিয়ে সেখানাকার ১১টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে গিয়েছেন বাইডেন। যার ফলে তাঁর মোট ভোটসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯০তে।