আল কায়দার বর্তমান প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি।
বর্তমানে তাদের যা ক্ষমতা, তাতে আঞ্চলিক ভাবে কয়েকটি নাশকতার ঘটনা ঘটানো ছাড়া তেমন বড় কিছু ঘটাতে পারবে না ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে কার্যকলাপ চালানো নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আল-কায়দা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ বা একিউআইএস। বৃহস্পতিবার মার্কিন সেনেটে দাঁড়িয়ে এমনটাই জানালেন মার্কিন সন্ত্রাস দমন সংগঠনের এক কর্তা।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার হানায় সংগঠনের নেতা আসিম উমরের মৃত্যুর জেরে বড়সড় ধাক্কা খায় একিউআইএস। অনেকটাই ক্ষমতাসীন হয়ে পড়ে তারা। ফলে ছোটখাটো নাশকতা চালালেও বড় কিছু ঘটনোর ক্ষমতা বর্তমানে অন্তত তাদের নেই— এ দিন সেনেট হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স কমিটির সামনে এমনটাই দাবি করেছেন ন্যাশনাল কাউন্টার-টেরোরিজ়ম সেন্টারের ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার মিলার। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমানে আল-কায়দার এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা জনা পঞ্চাশেকেরও কম। যারা এখনও আছে, তারাও টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। সঙ্গে বিভিন্ন রকমের চাপও কাজ করছে তাদের উপর। ফলে দেশের বাইরে গিয়ে নাশকতা চালানোর মতো পরিকাঠামো আপাতত তাদের হাতের বাইরে।’’
বিশ্ব জুড়ে দু’দশক আগে শুরু হওয়া সন্ত্রাস দমন অভিযানে আমেরিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যার ফলস্বরূপ জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে আমেরিকা এখন বেশ দুর্ভেদ্য লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মত মিলারের। যদিও তাঁর এও বক্তব্য যে, বর্তমানে আমেরিকা বা তার মিত্র দেশগুলির উপর হামলা চালানো সন্ত্রাসবাদীদের কাছে সহজ না-হলেও ভুলে গেলে চলবে না যে, ২০০১ সালে যা ছিল, এখন তার চেয়ে অনেক বেশি শাখা বিস্তার করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে তারা।
এই প্রসঙ্গে মিলারের সুরেই সুর মিলিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার রে। তাঁর মতে, লাগাতার সন্ত্রাস দমন অভিযানের জেরে একিউআইএস আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ক্ষমতা যে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে তা ঠিক। সেই কারণেই ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায় নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর দিকেই নজর দেবে আল-কায়দা। বিভিন্ন দেশের স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জোট বেঁধে স্থানীয় ভাবে ছোটখাটো নাশকতা চালানোর দিকেও নজর থাকবে তাদের। রে-র কথায়, ‘‘সেই কারণেই গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে স্বতন্ত্র ভাবে নাশকতা চালানোর জন্য সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আল-কায়দা নেতৃত্ব।’’