ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন আমেরিকা সফরের আগে তাঁকে খোঁচা দিয়েছিলেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। আর তা দিতে গিয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে মিত্রতার কথাও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। রুশ বিদেশমন্ত্রীর ওই খোঁচার পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি নয়াদিল্লি। গত কাল রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির কার্যালয়ের কর্তা আন্দ্রে ইয়ারমাকের সঙ্গে শান্তি-সূত্র নিয়ে কথা বললেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। বিষয়টি নিয়ে ডোভালের দফতর থেকে সংবাদমাধ্যমকে কিছু না জানানো হলেও, ইয়ারমাক সে দেশের সাংবাদিকদের কাছে এই ফোনালাপ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
যুদ্ধ বন্ধ করতে গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ১০ দফা শান্তি-সূত্রের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। তাঁর প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের কথায় এর পোশাকি নাম ‘ইউক্রেন শান্তি ফর্মুলা’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট চান, আগামী মাসে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন’-এ এই নিয়ে আলোচনা হোক। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি জাপানের হিরোশিমায় আয়োজিত জি৭ বৈঠকে মোদী এবং জ়েলেনস্কি পার্শ্ববৈঠকও হয়েছিল। সেখানেও ওই শন্তি সূত্রের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন জ়েলনস্কি। মোদীর বক্তব্য ছিল, শান্তি ফেরাতে ভারত যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। ডোভালের সঙ্গে কথার পরে ইয়ারমাক বলেন, ‘‘আমরা চাই, আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অংশগ্রহণ করুন। শান্তি ফেরাতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ইউক্রেনে শান্তি ফেরা কতটা জরুরি, তা সাম্প্রতিক অতীতের ঘটনাগুলি থেকে প্রমাণিত। আশা করছি এতে অংশগ্রহণ করবে ভারত।’’
তবে এই প্রথম নয়, গত ফেব্রুয়ারিতেও কথা হয়েছিল ডোভাল ও ইয়ারমাকের।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারত-রাশিয়া সুসম্পর্কের কথা গোটা বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত। ফলে যুদ্ধ বন্ধের প্রশ্নে ভারত মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিলে, তাতে কিছুটা কাজ হতে পারে, এমনটা মনে করে আমেরিকা-সহ পশ্চিম দুনিয়া। যদিও বর্তমান ভূকৌশলগত পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষে সেই ভূমিকা পালন করা কঠিন বলেই মনে করে কূটনৈতিক মহল। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কোনও ঝুঁকি ভারত নেবে না। তবে চাপ এবং পাল্টা চাপের কূটনীতিতে ডোভাল-ইয়ারমাক ফোনালাপের গুরুত্ব রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।