এল্লা আদু-কিস্সি-ডেবরা।
ছ’বছর বয়স থেকেই শ্বাসকষ্ট ভুগত লন্ডনের বাসিন্দা এল্লা আদু-কিস্সি-ডেবরা। এক শীতের দুপুরে প্রবল হাঁপানির টান উঠেছিল ন’বছরের ওই বালিকার। অন্যান্য বারের মতো এ বারও চিকিৎসকেরা সাধ্য মতো চেষ্টা চালান। তবে শেষরক্ষা হয়নি।
ঘটনাটি ২০১৩-র ৫ ফেব্রুয়ারির। সম্প্রতি ফের চর্চায় উঠে এসেছে সেই বালিকার মৃত্যু। কারণ ফিলিপ বার্লো নামে ব্রিটেনের এক শবপরীক্ষক গত বুধবার জানিয়েছেন, ‘বায়ুদূষণই’ একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল শিশুটিকে। এমনকি মৃত্যু-শংসাপত্রে বায়ুদূষণকে এল্লার মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রিটেনে তো বটেই পুরো বিশ্বেই যা এই প্রথম। এই বিরল ঘটনাকে ‘যুগান্তকারী মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তবে এর নেপথ্যে রয়েছে এল্লার মা রোজ়ামান্ডের দীর্ঘ লড়াই।
ব্রিটেনে বায়ুদূষণই যে মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী, তা প্রমাণ করার জেদ ধরেন রোজ়ামান্ড। দক্ষিণপূর্ব লন্ডনের কাছে ব্যস্ত রিং রোড থেকে ৩০ মিটার দূরে থাকত এল্লারা। রোজ়ামান্ডের আইনজীবীদের পেশ করা নথি থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়, রোজ়ামান্ডরা যে অঞ্চলে থাকেন, সেখানকার বায়ুদূষণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেঁধে দেওয়া মাত্রার অনেক বেশি।
মাত্র ছ’বছর বয়সে প্রথম শ্বাসকষ্ট এবং কাশির কারণে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় এল্লাকে। পরের তিন বছরে আরও অন্তত ২৬ বার। ২০১২-য় পঙ্গু হয় পড়েছিল এল্লা। পরের বছরই ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয় জীবনযুদ্ধ। প্রত্যেক মুহূর্তে বিষ গ্যাস শরীরে ঢোকাই এর জন্য দায়ী, জানাচ্ছেন এল্লার চিকিৎসক স্টিফেন হোলগেট। তিনি আরও জানান, শুধু শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাই নয়, ডিমেনশিয়ার মতো একাধিক সমস্যারও জন্ম দিতে পারে বায়ুদূষণ।
গত বছরের এক সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের ৯১% মানুষই এমন জায়গায় বাস করছেন যেখানে বায়ুদূষণের মাত্রা হু-র নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।