মায়ানমারে বিক্ষোভ। ছবি—পিটিআই।
সকালে কাজের ব্যস্ত সময়ে শহরের বিভিন্ন বড় বড় রাস্তায় দাঁড় করে রাখা সার সার গাড়ি। আচমকা দেখে মনে হতে পারে, বিকল হয়ে পড়া সব গাড়ি জড়ো করে একত্র করা হয়েছে রাজপথে। আসলে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন আরও জোরদার করতে আজ এই পন্থাই নিলেন মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষেরা। সরকারি কর্মচারীরা যাতে কর্মক্ষেত্রে না পৌঁছতে পারেন, তাই ইয়াঙ্গনের রাস্তা অবরুদ্ধ করে চলল বিক্ষোভ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সেনা বিরোধী বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইয়াঙ্গন শহর। আজও এখানে বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ।
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী এনএলডি নেত্রী আউং সাং সু চি-র বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনে গত কাল থেকে তাঁর গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ বাড়িয়েছে দেশের সেনা সরকার। তার ফলে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়েছে আজ থেকে। সরকারি চিকিৎসক-শিক্ষকদের একাংশ আগেই সেনার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে শামিল হয়ে কাজে যাচ্ছেন না। এ বার সেনার আওতায় থাকা পরিষেবা ও জিনিস বয়কটও করতে শুরু করেছেন দেশের মানুষ। ধীরে ধীরে আবার দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরায় আজ ফেসবুকের মাধ্যমে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ডাক দেন অনেকে।
সু চি-র দল এনএলডি-র এক সদস্য হিন স্যান্ডার সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘লক্ষ মানুষের জমায়েত হোক সেনাকে সরাতে। দেশের ভবিষ্যতের জন্য মিছিল করে এগোতে হবে।’’ সিথু মাউং নামে এনএলডি-র আর এক সদস্য বললেন, ‘‘আমাদের প্রজন্মই যেন সেনা অভ্যুত্থান দেখা শেষ প্রজন্ম হয়।’’
আজ থেকে আন্দোলন আরও জোরদার হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেনা মোতায়েনও বেড়েছে। মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যানড্রুজ়ের আশঙ্কা, এ বার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর দমননীতি নেবে সেনা। সেনার দাবি, দেশের ৫.৩ কোটি জনতার মধ্যে ৪ কোটি মানুষই তাদের সমর্থন করেন, সু চি-কে নয়। কাল ফের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শীঘ্রই নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেনা। আন্দোলনকারীদের অবশ্য তাতে ভরসা নেই একেবারেই।