আমেরিকার আকাশে দেখতে পাওয়া সাদা বেলুনটির মতোই এক উড়ন্ত বস্তুর দেখা মিলেছিল কলম্বিয়ার আকাশে। ফাইল ছবি।
চিনের পাঠানো ‘চর’ বেলুনটি সদ্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা ধ্বংস করেছে বলে জানিয়েছিল আমেরিকান প্রশাসন। যার ফল আমেরিকাকে ভুগতে হবে বলে গত কাল হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে চিনের বিদেশ মন্ত্রক। এর মধ্যেই আমেরিকার আকাশে দেখতে পাওয়া সাদা বেলুনটির মতোই এক উড়ন্ত বস্তুর দেখা মিলেছিল কলম্বিয়ার আকাশে। সে দেশের বায়ুসেনা বাহিনীর তরফে সম্প্রতি জানানো হয়, গত কয়েক দিন তাদের আকাশসীমায় ওই অজানা বস্তুটিকে দেখা গিয়েছিল। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর ঠিক দু’দিন আগেই এক সতর্কবার্তায় বলেছিল, উত্তর আমেরিকার আকাশে গত সপ্তাহ জুড়ে যে ‘চর’ বেলুনের দেখা মিলেছে, প্রায় একই জিনিস উড়তে দেখা গিয়েছে লাতিন আমেরিকার কোনও কোনও দেশেও। তবে আমেরিকান প্রশাসনের মতো সেই বেলুনকে ধ্বংস করেনি কলম্বিয়া সরকার। তাদের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হচ্ছে না দেখেই তারা তাদের আকাশসীমায় থাকাকালীন বেলুনটিকে ধ্বংস করেনি। আজ চিনের বিদেশ মন্ত্রক আরও এক বার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, কলম্বিয়ার আকাশে যে বেলুনটি দেখা গিয়েছিল, সেটিও তাদের পাঠানো। দিক ভুল করে সেটি লাতিন আমেরিকায় চলে যায়। তবে সেটি চরবৃত্তির জন্য পাঠানো হয়নি বলেই দাবি করেছে চিন।
এর আগে আমেরিকার আকাশে চক্কর কাটা বেলুনটিকে ‘অসামরিক আবহাওয়া’ সংক্রান্ত বেলুন বলে দাবি করেছিল বেজিং। প্রায় একই সঙ্গে চিনের আবহাওয়া দফতরের প্রধানকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে। খুব সম্প্রতি চিনের স্টেট কাউন্সিল ঝুয়াং গুয়োতাইকে তাঁর পদ থেকে অপসারিত করেছে। কেন এই অপসারণ, তা নিয়ে মুখ খোলেনি শি জিনপিং সরকার। ঝুয়াংয়ের জায়গা কাকে আনা হচ্ছে, তা-ও এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, বেলুন কাণ্ডের সঙ্গে ঝুয়াংয়ের অপসারণের কোনও না কোনও যোগাযোগ রয়েছে। আপাতত কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ম মেনে ৬০ বছরের ঝুয়াংকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য করা হয়েছে। চিনের সংবাদমাধ্যমে অবশ্য দাবি, ৬৫ বছরে অবসরের আগে চিনের সরকারি পদে কর্মরত যে কোনও পদাধিকারীকেই এই ধরনের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা কমিটিতে পাঠানো হয়, এতে জল্পনার কিছু নেই।
বেলুন ধ্বংসের পর থেকেই আমেরিকার উপর ক্ষুব্ধ চিন। গতকালের মতো আজও আমেরিকান প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বেজিং। গত নভেম্বরে বালিতে দু’দেশের সম্পর্ক শোধরানোর বার্তা দিয়েছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেই প্রসঙ্গ তুলে চিনের উপ বিদেশমন্ত্রী শিয়ে ফেং আজ বলেছেন, ‘‘আমেরিকার একটা পদক্ষেপ গোটা প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।’’ চিন গোটা বিষয়ের উপরে কড়া নজর রাখছে ও প্রয়োজনে তারা যে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ফেং।