১৯ বছর পরে নেপালের জেল থেকে মুক্তি পেলেন চার্লস শোভারাজ। ফাইল চিত্র।
নেপালের সুপ্রিম কোর্ট বুধবার তাঁর মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করেছিল। সেই নির্দেশ মেনে শুক্রবার ‘বিকিনি কিলার’ চার্লস শোভরাজকে মুক্তি দিল সে দেশের সরকার। প্রায় ১৯ বছর পরে কাঠমান্ডু জেল থেকে বেরোলেন একাধিক খুন, ধর্ষণ, লুটের ঘটনায় দোষী ৭৮ বছরের ফরাসি নাগরিক।
নেপালের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, শোভরাজ কাঠমান্ডু জেলের বাইরে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ‘অজ্ঞাত’ স্থানে যাচ্ছেন। একটি সূত্রের খবর, শোভরাজের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সত্তরের দশক এবং আশির দশকের গোড়ায় তাইল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশে মহিলা পর্যটকদের মাদক খাইয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে শোভরাজের বিরুদ্ধে। তাঁর অধিকাংশ শিকারের পরনেই নাকি থাকত বিকিনি। খুনের ধরন দেখে শোভরাজকে বলা হত ‘দ্য স্প্লিটিং কিলার’। হত্যাকাণ্ডের পরে সরীসৃপের মতো মসৃণ পথে পালানোর কায়দা তাকে নাম দিয়েছিল ‘দ্য সারপেন্ট’। পরে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এই নামেই শোভরাজের জীবনীর অনুকরণে একটি ওয়েব সিরিজ তৈরি করেছিল।
বিশ্বের অপরাধ মানচিত্রে অন্যতম কুখ্যাত এই ‘সিরিয়াল কিলার’ দিল্লিতে ৩ পর্যটককে বিষ খাওয়ানোর অপরাধে ভারতের তিহাড় জেলেও ছিলেন দীর্ঘ দিন। একাধিক ভাষায় পারদর্শী শোভরাজ তার সুদর্শন চেহারা এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগাতেন ‘শিকার’কে বাগে আনতে। একাধিক বার জেল থেকে পালানোর অভিযোগও উঠেছে শোভরাজের বিরুদ্ধে। ১৯৮৬ সালে তিহাড় থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছু দিন পরেই গোয়ার এক রেস্তরাঁ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৯৭ সালে ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন শোভরাজ। এর পর নেপালে গেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৫ সালে কাঠমান্ডুতে দুই পর্যটককে খুনের মামলায় শোভরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছিল নেপালের আদালত। পুলিশি জেরায় শোভরাজ ১২ জনকে খুনের কথা কবুল করেন বলে নেপাল পুলিশে দাবি। সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রায় দু’দশক জেলবন্দি শোভরাজের মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করে। তবে জল্পনা ছিল, তাইল্যান্ডে একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত ‘বিকিনি কিলার’কে ব্যাঙ্ককে পাঠাতে পারে নেপাল সরকার।