উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম পরমাণু পরীক্ষায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফাইল চিত্র।
পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার পরেই পশ্চিমী দুনিয়াকে হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন! বৃহস্পতিবার তাঁর ঘোষণা, ‘‘শত্রুদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমাদের দেশ পরমাণু যুদ্ধের জন্য পুরোপরি প্রস্তুত।’’
বুধবার ২,০০০ কিলোমিটার পাল্লার পরমাণু অস্ত্র বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছিল উত্তর কোরিয়া। এই পরীক্ষার পিয়ং ইয়ংয়ের পরমাণু যুদ্ধের প্রস্তুতির অঙ্গ বলেই মনে করছেন সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি’ও জানিয়েছে, পরমাণু হামলার ক্ষমতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যেই দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কিমের বক্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
বস্তুত, চলতি বছরের গোড়ায় উত্তর কোরিয়া ধারাবাহিক ভাবে মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শুরু করার পরেই কিমের ‘গোপন পরমাণু পরিকল্পনা’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি। তার আগে ২০১৫-য় উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে পুনগেরি এলাকায় খননকার্য আমেরিকার গুপ্তচর উপগ্রহের নজরে এসেছিল। সে সময়ও পিয়ং ইয়ংয়ের পরমাণু পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিল আমেরিকা। তার বছর দেড়েকের মধ্যেই পরমাণু পরীক্ষা করেছিল কিম সরকার। এ বার কিম নিজেই পরমাণু যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলে সেই আশঙ্কা আরও উস্কে দিলেন।
এর আগে ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া শেষ বার পরমাণু পরীক্ষা করেছিল। আন্তর্জাতিক স্তরে যার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। সম্প্রতি, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া নিয়ে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে একনায়ক কিম নতুন করে পরমাণু পরীক্ষার পথে হাঁটলে, তা বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিন্ন মাত্রা পাবে।
আমেরিকার সামরিক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এর উপদেষ্টা এবং সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ক্রিস জনস্টোনের মতে, ইতিমধ্যেই পরমাণু পরীক্ষা ও অস্ত্র নির্মাণের প্রয়োজনীয় উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে সংগ্রহ করেছে কিম সরকার।