শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
দুই মানবাধিকার কর্মীর ২ বছরের কারাদণ্ডের পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার সমালোচনা ফের চেপে বসেছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের উপরে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ইস্তফা দাবি করে কাল থেকে ১২ দিন পথে নামার কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামা অন্য কয়েকটি দল। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে ভোটের আগে বাংলাদেশ এখন পুরোদস্তুর সরগরম। সোমবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে কারাগারের বাইরে থাকার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে সরকার। গুরুতর অসুস্থ হয়ে খালেদা এখন হাসপাতালে।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপরে হেনস্থার অভিযোগ করে সতত সরব মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। তাদের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে কোনও খোঁজ নেই— বিএনপির এই অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছিল ‘অধিকার’। সংগঠনের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলানকে পুরনো একটি মামলায় সম্প্রতি ২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার মতিঝিলে বসে পড়া হেফাজতে ইসলামির একটি সমাবেশকে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের অভিযোগ, ওই ঘটনায় বহু লোক তাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে বলে ভুয়ো খবর ছড়ায় ‘অধিকার’। হিংসা ছড়ানোর চক্রান্তের অভিযোগে ২০১৩ সালে করা মামলায় ‘অধিকার’-এর ২ কর্তাকে কারাদণ্ড দেয় আদালত। যদিও ‘অধিকার’-এর এক আইনজীবী জানান, ভুয়ো রিপোর্টটি যে ‘অধিকার’-এর প্রচার করা, সেটা প্রমাণ করা যায়নি। তার পরেও শাস্তি হয়েছে।
‘অধিকার’ কর্তাদের কারাদণ্ডের জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে ও বিরোধীদের হেনস্থা বন্ধ করার পরামর্শ হাসিনা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্স, আমেরিকা ও রাষ্ট্রপুঞ্জও উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ তৈরির কথা বলেছে। বাংলাদেশ জুডিশিয়াস সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবের নিন্দা করে রবিবার বলেছে, সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ভাবে ওই মামলার শুনানি হয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাব একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার প্রচেষ্টা।