কাবুল থেকে আমেরিকার সেনা সরতেই পঞ্জশির দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে তালিবরা। ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান দখল করলেও পঞ্জশির উপত্যকাকে নিজেদের কব্জায় আনতে লড়াই চালাতে হচ্ছে তালিবানকে। এর মধ্যেই তালিবানের তিন সূত্র শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করে পঞ্জশির তাঁদের দখলে এসেছে। এমনকি আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের অন্যতম মুখ আমরুল্লা সালেহ্ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর রটেছিল। যদিও পরে তিনি টুইট করে আফগানিস্তানে রয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। তালিবানের পঞ্জশির দখলের খবরকেও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি।
কাবুল থেকে আমেরিকার সেনা চলে যেতেই পঞ্জশির দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে তালিবরা। কিছু তালিব যোদ্ধা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কাছে জল্পনা ছড়ায়, ‘‘আমরা গোটা আফগানিস্তানের দখল নিয়েছি। বিরোধীরা পরাজিত। পঞ্জশির এখন আমাদের দখলে।’’ যদিও এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সংবাদ সংস্থা।
তালিবানের পঞ্জশির দখলের দাবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হতেই তা নস্যাৎ করেছেন সালেহ্। এমনকি তাঁর দেশ ছাড়ার খবরকেও ভুয়ো বলেছেন। বিবিসি-র এক সাংবাদিককে তিনি একটি ভিডিয়ো পাঠিয়েছেন। সেই ভিডিয়োয় সালেহ্ বলছেন, ‘‘কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে আমার দেশ ছাড়ার খবর। তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি পঞ্জশিরে আছি। এখানকার রাজনীতিক এবং যোদ্ধাদের সঙ্গে রয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’’ তবে তালিবানের আক্রমণ গত কয়েকদিনে তীব্র হয়েছে, সে কথাও ওই ভিডিয়োয় স্বীকার করেছেন গনি জমানার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই, পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। তালিবান, পাকিস্তান, আল কায়দা এবং অন্য জঙ্গিগোষ্ঠী আক্রমণের মুখে আমরা। গত চার-পাঁচ দিনে তালিবানি আক্রমণ তীব্র হয়েছে। কিন্তু তাঁরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায়নি। তাঁদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদেরও হয়েছে।’’ এর পরই তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা মাটিতেই রয়েছি। লড়ছি।’’
একই বার্তা টুইট করেও জানিয়েছেন তিনি। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিরোধ চলছিল, চলবে। আমি আমার মাটিতে আছি, মাটির মর্যাদা রক্ষার জন্য আছি।’ আমরুল্লা সালেহ্-এর ছেলে ইবাদুল্লা সালেহ্ পঞ্জশিরের পতন নিয়ে এক বার্তায় লিখেছেন, ‘না, এটা মিথ্যা।’ দু’দশক পর আমেরিকার সেনা চলে গেলেও তালিবানের মাথার কাঁটা হয়ে রয়েছে পঞ্জশির উপত্যকার প্রতিরোধ। আগামী দিনে সেখানকার পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, সে দিকেই এখন নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের।