ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তালিবান নেতৃত্ব গোটা বিশ্বের সামনে বলে আসছেন, নতুন জমানায় আফগান মহিলারা পড়াশোনা ও কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন না। তবে সেই সঙ্গেই তাঁদের শর্ত, মেয়েরা ততটাই অধিকার পাবেন শরিয়তে যতটুকু বলা আছে। সম্প্রতি আফগান মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে ডিক্রি জারি করেছে তালিবান। সেই ডিক্রি প্রকাশ্যে আসার পরেই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও সন্দিহান আফগানিস্তানের মেয়েরা। ইতিমধ্যেই কাবুল আর হেরাটে নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। আফগান মহিলাদের একাংশ প্রকাশ্যেই বলছেন, কুড়ি বছর আগের তালিবানের সঙ্গে এই তালিবানের কোনও পার্থক্য নেই।
সম্প্রতি আবদুল বাকি হক্কানিকে অন্তর্বর্তী উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছে তালিবান। দায়িত্ব পেয়েই তিনি ঘোষণা করেন, ছেলে আর মেয়েরা একসঙ্গে পড়াশোনা করতে পারবেন না। এখন ডিক্রির যে শর্তাবলি সামনে আসছে, তা দেখে আফগানিস্তানের মেয়েরাই বলছেন, তাঁদের পক্ষে উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তালিবান জানিয়েছে, মেয়েরা পুরুষ শিক্ষকদের কাছে পড়তেও পারবেন না। প্রয়োজনে বয়স্ক মহিলা শিক্ষিকাদের খোঁজ চালানো হবে। যাতে তাঁদের কাছে মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারেন। শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের জন্য কালো পোশাক বিধিও জারি করেছে তালিবান। মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য দেওয়া হবে আলাদা বাস। বাস চালকের সঙ্গে ছাত্রীদের যাতে কোনও ভাবে যোগাযোগ না-হয়, তার জন্য চালকের আসনের পিছনে দেওয়া থাকবে পর্দা। ক্লাসের মাঝখানে অবসর সময়ে আলাদা ওয়েটিং রুমে থাকতে হবে মেয়েদের। তাঁরা বাইরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাবেন না।
দেশে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব। তাই আলাদা করে মেয়েদের জন্য পড়ার জায়গা কত দূর মিলবে, তা নিয়েই সংশয়। অনেকেই বলছেন, পরিকাঠামোর অভাবেই মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হবে তাঁদের। সে জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা বিভিন্ন শহরে তালিবান-বিরোধী বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন। এক দিকে যখন আফগানিস্তানের সাধারণ মহিলারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত, অন্য দিকে, দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, আফগান মহিলা যৌন কর্মীদের এখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন তালিবান যোদ্ধারা। তাঁদের খোঁজ চলছে পর্ন সাইটগুলিতেও। আগের জমানায় মহিলা যৌন কর্মীদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করত তালিবান। এ বারও তার অন্যথা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা