ফ্রেশতা কোহিস্তানি। ছবি: নিহতের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সংগৃহীত।
আফগানিস্তানে নিজের বাড়ির সামনে খুন হলেন সমাজকর্মী ফ্রেশতা কোহিস্তানি। বৃহস্পতিবার মোটরবাইকে চেপে তাঁর সামনে হাজির হয় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তাতেই মৃত্যু হয় ফ্রেশতার। গুলিবিদ্ধ হন তাঁর এক ভাইও। জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁরও মৃত্যু হয়। এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি।
কাপিসা প্রদেশের কোহিস্তান জেলার হেস-ই-আওয়াল এলাকায় দানহো গ্রামে বসবাস ছিল ফ্রেশতার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে বলে আফগান সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
নারী অধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিলেন ২৯ বছরের ফ্রেশতা। গতবছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবদুল্লা আবদুল্লার হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকার পাশাপাশি, নারী অধিকার নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে কাবুল-সহ দেশের নানা জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন তিনি। দিন কয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রেশতা জানান, তিনি খুনের হুমকি পাচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী কখনও জমি নিয়ে কোনও বেনিয়মের কথা জানায়নি: অমর্ত্য
তার পরেই এই ঘটনা। ফ্রেশতার খুনের তীব্র নিন্দা করেছে সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রক। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র তারিক আরিয়ান একটি বিবৃতিতে জানান, বন্দুকবাজদের গুলিতে খুন হয়েছেন ফ্রেশতা। বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেছেন। তবে আবদুল্লার দাবি, জঙ্গিরাই ফ্রেশতাকে গুলি করে মেরেছে। আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আবদুল্লার। কিন্তু এই ঘটনা কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
আফগান সরকার এবং তালিবানের মধ্যে শান্তি বৈঠক চলাকালীন সম্প্রতি সে দেশে রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মীদের উপর হামলা এবং খুনের ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। ফ্রেশতার উপর যে ভাবে হামলা চালানো হয়, অবিকল একই ধাঁচে গুলি করে খুন করা হয়েছে বহু বিশিষ্ট মানুষকে। বুধবার কাবুলে প্রকাশ্য দিনের আলোয় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন মহম্মদ ইউসুফ রশিদ নামের এক ব্যক্তি। নির্বাচনী দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তকারী একটি সংগঠন চালাতেন তিনি।
আরও পড়ুন: অশ্বিন, বুমরার জোড়া ধাক্কা, ইনিংস মেরামতে লড়ছে অস্ট্রেলিয়া
চলতি সপ্তাহে গজনিতে মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন রহমাতুল্লা নেকজাদ নামের এক সাংবাদিক। গত দু’মাসে এই নিয়ে চতুর্থ বার কোনও সাংবাদিক খুন হলেন সেখানে। এ বছর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত মোট ৭ জন খুন হয়েছেন আফগানিস্তানে। স্বাধীন বালুচিস্তানের দাবিতে সরব বিশিষ্ট সমাজকর্মী করিমা বালোচের সাম্প্রতিক মৃত্যু ঘিরেও রহস্য দানা বাঁধছে। পাকিস্তান সরকারের নাগাল ছাড়িয়ে কানাডায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। একদিন নিখোঁজ থাকার পর হারবারফ্রন্ট থেকে সম্প্রতি তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।