জো বাইডেন (বাঁ দিকে) এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র
ঢের হয়েছে। আর নয়। বন্ধু রাষ্ট্র ইজ়রায়েলকে এ বার চরম পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিল আমেরিকা। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামাসের সঙ্গে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার কথা বলেছেন। তবে এ বার বিষয়টি কেবল আর্জি বা অনুরোধের পর্যায়ে রাখেনি আমেরিকা। বাইডেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষিত না হলে ইজ়রায়েলকে সমর্থন করার বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে দেখবে আমেরিকা।
গত ৭ অক্টোবর গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হওয়ার পর এমন কড়া হুঁশিয়ারি আমেরিকা কবে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে দিয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না প্রায় কেউই। দুই রাষ্ট্রনেতার এই ফোন-কথোপকথনের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে হোয়াইট হাউস। তাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিদেশি ত্রাণকর্মী এবং নিরীহ প্যালেস্টাইনিদের উপর হামলার ঘটনাকে ভাল ভাবে নেয়নি আমেরিকা।
তবে ইজ়রায়েল কোনও আশু পদক্ষেপ করলে আমেরিকা সন্তুষ্ট হবে এবং তার অন্যথা হলে ইজ়রায়েল নিয়ে ওয়াশিংটন কী অবস্থান নেবে, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। চলতি বছরের শেষেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ইহুদি এবং ইজ়রায়েল প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হলেও বেশ কয়েকটি দোদুল্যমান প্রদেশে আরব মুসলমানদের ভোটও নির্ণায়ক হতে পারে। মনে করা হচ্ছে, সে অঙ্ক মাথায় রেখেই এগোচ্ছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী হতে চলা বাইডেন।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা এ বারের রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, “ইজ়রায়েল যুদ্ধে হারবে।” একই সঙ্গে তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে যুদ্ধ থামানোর কথা বলেছিলেন। ইজ়রায়েলকে অস্ত্র এবং অর্থসাহায্য চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বাইডেনও।
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে রমজান মাস শুরুর পরেই আমেরিকার প্রেডিডেন্ট জো বাইডেন ছ’সপ্তাহের জন্য গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। নিরাপত্তা পরিষদ গাজ়ায় ইজরায়েলি ফৌজের হামলা রমজান মাসে বন্ধ রাখার প্রস্তাবেও সায় দিয়েছে ভোট দানের অধিকারপ্রাপ্ত রাষ্ট্র আমেরিকা। তার পরেই ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আমেরিকায় কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলের সফর বাতিল করেন। ওয়াশিংটন থেকে তাদের ফেরত আসার নির্দেশ দেওয়া হয় তেল আভিভের তরফে। নিরাপত্তা পরিষদে ১৪-০ ভোটে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, গাজ়ার সাধারণ নাগরিকদের পবিত্র রমজানে যুদ্ধের ভয়াবহতার আঁচ থেকে রেহাই দিতেই এই পদক্ষেপ। তার পরেও অবশ্য ইজ়রায়েল গাজ়ায় হামলা চালানো বন্ধ করেনি। এই নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলি তো বটেই, ইজ়রায়েলবাসীর একাংশও নেতানিয়াহু সরকারের সমালোচনা করে।