রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক টাকার কার্লসেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অ্যারিজোনার গ্লেনডেনে। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকার জনসংখ্যার শতকরা ১.৩৪ ভাগ মুসলিম। এবং এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় যা ইঙ্গিত তাতে মনে হচ্ছে, এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিভিন্ন ‘সুইং স্টেট’-এর মুসলিম ও সংখ্যালঘু ভোটই হবে এই নির্বাচন জয়ের তুরুপের তাস।
আমেরিকার মোট ভোটযুদ্ধ মূলত হয় ‘ব্লু ওয়াল স্টেট’ এবং ‘সানবেল্ট স্টেট’— এই প্রদেশগুলির মধ্যে। ১৯৯২ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনে যে প্রদেশগুলিতে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ডেমোক্র্যাটেরা জিতেছেন, রাজনৈতিক পণ্ডিতেরা সেই প্রদেশগুলির ‘নীল-প্রাচীর’ নামকরণ করেছেন। আর যে সব প্রদেশ পাকাপাকি রিপাবলিকান সমর্থক, তাদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সান বেল্ট স্টেইট’। এই ‘নীল প্রাচীর’ ও ‘লাল বেল্ট’-এর বাইরে রয়েছে সুইং বা ‘অনিশ্চিত’ প্রদেশগুলি, কখনও তারা ডেমোক্র্যাটদের দিকে ঝোঁকে, কখনও বা রিপাবলিকানদের দিকে। রাজনৈতিক পণ্ডিতেরা মনে করছেন, এই ‘অনিশ্চিত’ প্রদেশগুলিতে এ বার মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন সংখালঘুরা। বেশ কয়েকটি প্রদেশে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক কোন দিকে ঝুঁকছে, তার উপরে নির্বাচনী ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মিশিগান প্রদেশকে। এই মিশিগানের ডিয়ারবোর্নেই রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদটি। দেশের মধ্যে মুসলিম ভোটদাতার শতকরা শতাংশও এই প্রদেশে সব থেকে বেশি।
আমেরিকার বিদেশনীতিতে সাধারণত ‘ইজরায়েল-পৃষ্ঠপোষকতা’ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। যার উদাহরণ, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন, ২০১৭-র ৬ ডিসেম্বর, বিতর্কিত জেরুসালেমকে ইজ়রায়েলের ‘রাজধানী’ স্বীকৃতি দিয়ে আমেরিকার দূতাবাসকে তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তাঁর প্রচারে সেই সব ইতিহাস সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। প্যলেস্টাইনে গণহত্যা, লেবানন আক্রমণ, সব কিছুর জন্যই জো বাইডেন প্রশাসনকে দুষছেন তিনি এবং দেশের বেশির ভাগ মুসলিম। জর্জিয়া, মিশিগানের মতো প্রদেশে ইমামরাও ডাক দিচ্ছেন, ‘প্যালেস্টাইন-বিরোধী’ কমলা হ্যারিসকে ভোট না দেওয়ার জন্য।
প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গ এ ভাবেই কি পাল্টে দেবে নির্বাচনী চালচিত্র? উত্তর মিলবে মঙ্গলবার।