জাকিউর রহমান লকভি। ফাইল চিত্র।
২৬/১১ হামলার অন্যতম চক্রী জাকিউর রহমান লকভিকে পাক প্রশাসনের গ্রেফতারের ঘটনা নেহাতই ‘লোক-দেখানো’ বলে মনে করছে ভারত। আগামী মাসে বসছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে পুঁজি জোগানের বিষয়টিতে নজরদার সংস্থা এফএটিএফ-এর বৈঠক। সেখানে স্থির হবে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাতেই রেখে দেওয়া হবে, নাকি তার থেকে মুক্তি দিয়ে আন্তর্জাতিক অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা করে দেওয়া হবে। কালো তালিকায় যাওয়ার একটা সম্ভাবনাও আতঙ্কিত করে রেখেছে অর্থনৈতিক ভাবে কোণঠাসা ইমরান সরকারকে। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে একটি বার্তা দিতে লকভিকে সাময়িক গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান, এমনটাই ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বিষয়টি নতুন নয়। অক্টোবরে এফএটিএফ-এর বৈঠকের ঠিক আগে লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করেছিল পাকিস্তান। নয়াদিল্লির বক্তব্য, মোট ১৪৬ জন পাক জঙ্গি রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ-তলিকায়। তাদের মধ্যে যারা ভারত-বিরোধী নাশকতায় যুক্ত, তারা অধিকাংশই বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে তথ্য রয়েছে সাউথ ব্লকের কাছে। অল্প কয়েক জন ধরা পড়লেও সাজা পায়নি। আন্তর্জাতিক চাপ আলগা হলেই আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাদের।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, পাক প্রশাসন জঙ্গিদের শাস্তি দিতে আদৌ উদ্যোগী নয়। তার প্রধান কারণ, পাক সামরিক বাহিনী তথা আইএসআই জঙ্গি সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের নাশকতায় সহায়তা করায় সরাসরি যুক্ত। একমাত্র আমেরিকা, এফএটিএফ অথবা রাষ্ট্রপুঞ্জের মারাত্মক চাপ এলে সাময়িক ভাবে কিছু পদক্ষেপ করতে দেখা যায় পাক সরকারকে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি-তালিকাভুক্ত লকভি গত পাঁচ বছর জামিনে থাকা অবস্থায় পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছে এবং বহু নাশকতার সঙ্গে যুক্ত থেকেছে বলেই মনে করেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তার বিরুদ্ধে গত এক দশকে বহু তথ্য ও প্রমাণ ভারত দেওয়া সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পাক সরকার। দিল্লি মনে করে, আপাতত তাকে গ্রেফতার করাটাও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস রোধে কোনও পদক্ষেপ নয়। বরং এটি পাকিস্তানের নিজস্ব বাধ্যবাধকতা। এই মর্মে নিজস্ব চ্যানেলে জানানো হবে এফএটিএফ-কেও।