আসিয়া ইসলাম। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
গবেষণার কাজে লম্বা সময় ধরে থাকতে হয়েছে ভারতে। তার জেরে এক ভারতীয় গবেষকের নাগরিকত্বের আবেদন খারিজ হল ব্রিটেনে। এই ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সে দেশের শিক্ষা মহলে। কেমব্রিজের গবেষক ওই তরুণীর সমর্থনে ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। গোটা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখতে সরকারকে খোলা চিঠি দিয়েছেন সে দেশের কয়েকশো শিক্ষাবিদ এবং গবেষক।
৩১ বছরের আসিয়া ইসলাম আদতে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের বাসিন্দা। পড়াশোনার জন্য প্রায় এক দশক আগে ইংল্যান্ড যান তিনি। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় পাশ করেন। তার পর মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডার সংস্থার স্কলারশিপে কেমব্রিজে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের শহরাঞ্চলে লিঙ্গ বৈষম্য এবং শ্রেণিবিভাগ নিয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পান।
চলতি বছরের শুরুতে পিএইচডি শেষ হলে তিন বছরের চুক্তিতে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজেরই নিউনাম কলেজে জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের প্রস্তাব পান আসিয়া, যার পর সে দেশের নাগরিকত্ব বা ইন্ডেফিনাইট লিভ টু রিমেইন (এলএসআর)-এর জন্য আবেদন করেন তিনি। তার উত্তরে গত সপ্তাহে ইংল্যান্ডের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে একটি চিঠি যায় তাঁর কাছে। তাতে বলা হয়, পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে এলেও, তার মধ্যে বড্ড বেশিদিন ভারতে কাটিয়েছেন তিনি। তাই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না তাঁকে। যে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ইংল্যান্ডে পা রেখেছিলেন, জানুয়ারির শেষ দিকে তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার পরই দেশে ফিরে যেতে হবে তাঁকে।
আরও পড়ুন: টানটান নাটক মহারাষ্ট্রে, ১০ জনপথে কংগ্রেস নেতারা, দলীয় বৈঠকে বসছেন শরদ পওয়ারও
গবেষণার কাজেই ২০১৬-’১৭-র মধ্যে কয়েক মাস ভারতে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। স্বরাষ্ট্র দফতরকে তা জানিয়েও ছিলেন আসিয়া। তাই এই চিঠি পেয়ে প্রথমে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারেন, গবেষণার কাজে অন্যত্র সময় কাটানোর জন্য আগেও অনেককেই দেশে ফিরে যেতে হয়েছে। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে টুইটারে সরব হন তিনি। তাতে ব্যাপক সাড়া মেলে। কেমব্রিজের সহকর্মীরাও তাঁর পাশে দাঁড়ান। সবমিলিয়ে ১২০০-রও বেশি শিক্ষাবিদ এবং গবেষক মিলে সে দেশের স্বরাষ্ট্র দফতরকে খোলা চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, আসিয়া ইসলামের মতো মেধাবী এবং কর্মনিষ্ঠ গবেষককে কোনও অজুহাতেই তাড়ানো যাবে না। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখতেও আর্জি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের ঢেউ ঝাড়খণ্ডে! একা লড়ার ঘোষণা এলজেপির, ভাঙনের মুখে এনডিএ
এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তবে তাদের এক আধিকারিক জানান, প্রত্যেক অভিবাসীর আবেদনই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাঁরা এ দেশে আসেন, দীর্ঘ এক দশকে ৫৪০ দিনের বেশি বাইরে কাটালেই তাঁদের নাগরিকত্বের আবেদন গৃহীত হয় না।