গুল বুখারি
উৎকণ্ঠার রাত পার করে বুধবার সকালে বাড়ি ফিরলেন পাকিস্তানের অপহৃত সাংবাদিক গুল বুখারি। কিন্তু কারা তাঁকে অপহরণ করেছিল, কেন করেছিল, কী ভাবেই বা তিনি ফিরে এলেন— সে রহস্যের পর্দা উঠল না। এই ঘটনায় পুলিশও কিছুই জানায়নি। বুখারি নিজেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। শুধু তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুল বুখারি ফিরেছেন। তিনি এখন সুস্থ।
মঙ্গলবার রাতে লাহৌরে একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ব্রিটিশ-পাক মহিলা সাংবাদিক বুখারি। শহরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তাঁর গাড়ি থামায় দুষ্কৃতীরা। বুখারিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহরণ করা হয়। ৫২ বছরের ওই সাংবাদিক পাক সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচক। তা ছাড়া, সামনেই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। গত কয়েক মাসে এই নির্বাচনকে ঘিরে পাক রাজনীতির আঙিনায় অস্থিরতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে এবং সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের বিরোধিতায় বার বার সরব হয়েছেন বুখারি। এই ঘটনায় পাক সেনার দিকে কেউ সরাসরি আঙুল তোলেননি। বরং পাক সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন। ব্রিটিশ নাগরিক বুখারিকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশনও।
বুখারির অপহরণের খবরে মঙ্গলবার রাত থেকেই তোলপাড় শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম টুইটারে লেখেন, ‘‘ঘটনাটি ভীষণ উদ্বেগের। খুব খারাপ ধরনের দমন-পী়ড়নের ঘটনা।’’ তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে এ দিন সরব হন দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা। যে চ্যানেলের অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার বুখারি যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সেই সংস্থা জানিয়েছে, অপহরণের সময়ে তাদের গাড়িতেই ছিলেন বুখারি। তবে অপহরণকারীদের বিষয়ে তেমন কিছুই জানাতে পারেননি চালক। বুধবার সকালে বুখারির বাড়ি ফেরা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটেনি। এ দিন লাহৌর বিমানবন্দরের কাছে আসাদ খারাল নামে আরও এক সাংবাদিকের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় অভিযোগের তির শাসক দল পিএমএলএনের দিকে।