ঠাকুমার সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেছিলেন বাবা। তার পর পারিবারিক সেই রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতেই এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধনকুবের থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কেমন ছিল সেই রূপান্তর-পর্ব? দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে।
আমেরিকার কুইন্স প্রদেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম ১৯৪৬-এর ১৪ জুন। অর্থনীতিতে স্নাতক ট্রাম্প পারিবারিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৭১-এ। এর নাম দেন দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন।
রাজনীতিতে আসার আগে ট্রাম্প ছিলেন আমেরিকার ধনকুবের শিল্পপতি এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। রিয়েল এস্টেট এবং হোটেল ব্যবসায় ট্রাম্পের সংস্থা প্রথম সারিতে।
বলা হয়, প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শিল্পপতি ট্রাম্পের সামিল হওয়ার পিছনে অন্যতম অনুঘটক ছিল বারাক ওবামার একটি মন্তব্য। যেটিকে বক্রোক্তি বলে ধরেছিলেন ট্রাম্প।
২০১১ সালে হোয়াইট হাউসের এক নৈশভোজে লঘুস্বরে ওবামা বলেছিলেন, নিজের পরিচয় নিয়ে ট্রাম্প সন্তুষ্ট এবং গর্বিত।
এই খোঁচাকে হাল্কা ভাবে নেননি ধনকুবের ট্রাম্প। তিনি অপমানিত বোধ করেন। শোনা যায়, এরপরই তিনি নিজের জীবনের প্রবাহ অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করেন।
২০১২ সালে মূলত নিজেদের ব্যবসার পরিধি আরও প্রসারিত করতে ব্যস্ত ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর পরিবার। তবে সে বছরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে রিপাবলিকান পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে সামিল হয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সফল হননি।
তার পরের বছর ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য ছিল নিজের বিশাল ব্যবসা-ই। তবে আগের থেকে অনেক বেশি তিনি সরব হন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সমালোচনায়।
নিজের পরিবারকেও যথেষ্ট সময় দেন শিল্পপতি ট্রাম্প। সপরিবারে সময় কাটাতে ভালবাসেন ফ্লোরিডার পাম বিচে। নিজের রিসর্ট ‘মার-আ-লোগো’ তে।
২০১৫ সালে ট্রাম্প ঘোষণা করেন তিনি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পরের বছর আরও ১৬ জন প্রার্থীকে পিছনে ফেলে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী মনোনীত হন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের চোখে প্রথম থেকেই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ছিল জনমোহিনী, রক্ষণশীল এবং জাতীয়তাবাদী।
এরপর সেই বহুচর্চিত ট্রাম্প-হিলারি যুদ্ধ। ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে হারিয়ে ২০১৭ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
২০১৭-র জানুয়ারি মাসে আমেরিকার ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁর পাশে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া এবং চার সন্তান ব্যারন, ইভাঙ্কা, এরিক ও টিফানি।
নিজের দেশেও যথেষ্ট বিতর্কিত ও সমালোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও যথেষ্ট বর্ণময়। সবদিক দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প নামটিই আজ একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে তাঁর নিজের ঘরানাই শেষকথা। (ছবি: পিটিআই,এপি,এএফপি এবং রয়টার্স)