উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে চলা বিক্ষোভ নিষ্ঠুর ভাবে দমন করার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল সুইৎজ়ারল্যান্ডে। সুইস ফেডারেল প্রসিকিউটরের অফিসে সে দেশের দণ্ডবিধির ২৬৪ ধারায় (গণহত্যা ও মানবতারর বিরুদ্ধে অপরাধ) এই অভিযোগ দায়ের করেছে ‘গের্নিকা ৩৭ চেম্বারস’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা।
ঠিক এই সময়েই ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)-এর অনুষ্ঠানে যোগী নিমন্ত্রণ পেয়েছেন। ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি সুইৎজ়ারল্যান্ডের ডাভোসে এই অনুষ্ঠান চলবে। এ দিকে, সুইস আদালতে গত মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মামলাকারী সংস্থা ‘গের্নিকা ৩৭ চেম্বারস’ বিশ্বের তাবড় অপরাধ ও মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবীদের নিয়ে তৈরি একটি বিশেষ সংগঠন। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা টোবি ক্যাডম্যান জানিয়েছেন, যোগীর বিরুদ্ধে যে ক্রিমিনাল রিপোর্ট রয়েছে, তার বিষয়বস্তু, ক্ষতিগ্রস্ত ও অভিযোগকারীদের পরিচয় এবং মামলার আবেদনকারীদের বিষয়ে তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। তাঁদের জীবন ও নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘গের্নিকা ৩৭ চেম্বারস’ একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে— ‘‘উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে মিথ্যা মামলায় জেলে কাটাতে হয়েছে অনেককে। খুন হতে হয়েছে, অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে অনেককে। ক্রিমিনাল রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের সাধারণ মানুষের উপরে, মূলত মুসলিমদের উপরে ছক কষে যে ভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’’
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তাদের বিশ্বাস যোগী আদিত্যনাথ-সহ উত্তরপ্রদেশ সরকারের শীর্ষস্থানীয় সদস্যদের নির্দেশেই এ রাজ্যের পুলিশ যা করার করেছিল। সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর যোগী একটি বক্তৃতায় পুলিশের উদ্দেশে বলেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘বদলা’ নিতে হবে। তাতে বোঝাই যাচ্ছে, পুলিশ রাজ্যে যে হিংসা চালিয়েছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর মদত রয়েছে।’’
২০১৯-এর ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হয়। এর পর বহু মানুষ এই আইনের বিরুদ্ধে পথে নামেন। অভিযোগ, বিক্ষোভ দমন করার নামে পুলিশের হাতে খুন হন অন্তত ২২ জন। ১১৭ জনের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল পুলিশ। ৩০৭ জনকে আচমকাই আটক করা হয়েছিল।