ঝলমল করছে শরীর। গোলাপি আভা যেন খসে পড়ছে। যেন এখনই পলিশ হয়ে এসেছে।
কিন্তু জানেন ছবিতে যে গোলাকার মুক্তো দেখতে পাচ্ছেন, তা ৮ হাজার বছরের পুরনো! ৮ হাজার বছর আগে কোনও এক ঝিনুকের বুকে জন্ম হয়েছিল এই মুক্তোর।
সম্প্রতি এর খোঁজ মিলল আবুধাবিতে। আবুধাবির মারওয়াহ দ্বীপে খননের সময় একটি ঘরের নীচ থেকে এই প্রাচীন ঐশ্বর্যের সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সন্ধান মিলেছে আরও অনেক প্রাচীন দুর্লভ সম্পদের।
মুক্তোটি পরীক্ষা করে গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি নব্য প্রস্তর যুগের। মুক্তোর আশেপাশে নব্য প্রস্তর যুগের পাথরের স্তম্ভ মিলেছে। গবেষণা করে জানা গিয়েছে, এটি ৫৮০০-৫৬০০ খ্রিস্টপূর্ব আমলের।
তখন অর্থাত্ নব্য প্রস্তর যুগে বিনিময়ের মাধ্যম ছিল মুক্তো। মুক্তো বিনিময়ের মাধ্যমে তত্কালীন মেসোপটেমিয়া বর্তমান ইরাকের লোকেরা জিনিস কেনাবেচা করতেন।
এখন যাকে তেলের দেশ বলে সারা বিশ্ব জানে, এই মুক্তো এক সময় সেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দেশের অর্থনীতির ধারক ছিল, জানিয়েছেন গবেষকরা।
পাশাপাশি বিভিন্ন গয়নার জন্যও মুক্তোর কদর ছিল অনেকটাই। ১৯৩০ সাল নাগাদ জাপানেও মুক্তো শিল্প ভীষণ জনপ্রিয় হয় ওঠে।
আরব আমিরশাহির মুক্তোর একচেটিয়া শিল্পে ধস নেমে আসে। ক্রমে তারা মুক্তোর দেশ থেকে তেলের দেশ হয়ে ওঠে।
তবে গবেষকদের একটা বিষয় অবাক করেছে। আট হাজার বছর ধরে মাটির তলায় চাপা পড়ে থাকা মুক্তো এতটা ঝলমলে কী করে রয়েছে এখনও? তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।
পাশাপাশি আট হাজার বছর আগে সমাজে এই মুক্তোর অন্য কোনও গুরুত্ব ছিল কি না, তারও খোঁজ চালাচ্ছেন তাঁরা।
আগামী ৩০ অক্টোবর আবুধাবির একটি মিউজিয়ামে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য প্রদর্শনী হবে এই প্রাচীন ঐশ্বর্যের, বিশ্বের প্রাচীনতম মুক্তোর।