— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কয়েক বছর ধরেই ওজন কমছিল তাঁর, চুল পাতলা হয়ে আসছিল। মনে রাখতে পারতেন না কিছুই। সারা দিন ঘোরের মধ্যে থাকতেন। মাঝে মাঝে ভুলও বকতেন। সন্তান ও বন্ধুদের ধারণা ছিল, হয়তো অ্যালঝাইমার্সে ভুগছেন।
চিত্রটা বদলে গেল হঠাৎই। ২০২০ সালের শেষের দিকে ওই বৃদ্ধাকে ডাকা হল দক্ষিণ ফ্রান্সের এক থানায়, তখন নিজের জীবন সম্পর্কে জানতে পারলেন আরও নানা নতুন তথ্য। জানলেন, দিনের পর দিন তাঁকে খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে খাইয়েছেন তাঁরই স্বামী। তার পর ধর্ষণ করেছেন। একাধিক অপরিচিত পুরুষকে বাড়িতে ডেকে এনেও ধর্ষণ করিয়েছেন স্ত্রীকে। তার পর ক্যামেরায় ধরে রেখেছেন সে সব দৃশ্য। সে নিয়ে পরে সমাজমাধ্যমে বড়াইও করেছেন স্বামী! আর এই নির্যাতন চলেছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, মহিলার অজান্তেই!
মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আগেই। তাঁর বয়স এখন ৭১। দীর্ঘ দু’বছরের তদন্ত শেষে চিহ্নিত করে আটক করা হয়েছে সন্দেহভাজন ৫১ পুরুষকে। তালিকায় রয়েছে আরও ৩৩ জনের নাম। অভিযুক্তদের বয়স ২৬ থেকে ৭৪ এর মধ্যে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন ওই মহিলাকে। ঘটনার ছবি ও ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করে রাখতেন মহিলার স্বামী। সে সব ছবি দেখেই ধরা হয়েছে সন্দেহভাজনদের। যদিও এক জন ছাড়া অভিযুক্তদের কাউকেই চিনতে পারেননি ওই বৃদ্ধা।
নিজের সঙ্গে কী হয়েছে জানার পর বৈবাহিক সম্পর্কে ইতি টেনেছেন বৃদ্ধা। তবে মনে করতে পারেননি কিছুই। স্মৃতি দুর্বল, তা ছাড়া ঘটনার সময়েও অচেতন থাকতেন তিনি। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই আলোড়ন শুরু হয়েছে ফ্রান্সে। নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাদক ব্যবহার এবং যৌন নির্যাতনের একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছরের জেল হবে তাঁর। শাস্তি পাবেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলেই। এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে ফ্রান্স।