ইরমা-আতঙ্ক, ফ্লোরিডা ছাড়লেন ৫৬ লক্ষ মানুষ

কিউবার ক্যামাগুয়ে দ্বীপপুঞ্জে ইরমা আছড়ে পড়তেই প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ মাইল বেগে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সমুদ্র উত্তাল, আকাশ অন্ধকার, নুয়ে পড়া পাম গাছ, ভারী বৃষ্টি। নামছে ধস। হুবহু গত সপ্তাহের আতঙ্কের ছবি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ফ্লোরিডা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়শিবিরে। শনিবার মায়ামিতে। ছবি: এপি

ভয়াল ‘ক্যাটেগরি পাঁচ’-এর ঝড় হয়ে শনিবার ভোরে কিউবার উত্তর উপকূলে ঢুকে পড়েছে হারিকেন ইরমা। এ বার লক্ষ্য ফ্লোরিডা। শেষ পাওয়া খবরে ঝড়ের অবস্থান মায়ামি থেকে ২৪৫ মাইল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে। শনিবার রাতে বা রবিবার ভোরেই ফ্লোরিডায় পৌঁছে যাবে ঝড়।

Advertisement

কিউবার ক্যামাগুয়ে দ্বীপপুঞ্জে ইরমা আছড়ে পড়তেই প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ মাইল বেগে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সমুদ্র উত্তাল, আকাশ অন্ধকার, নুয়ে পড়া পাম গাছ, ভারী বৃষ্টি। নামছে ধস। হুবহু গত সপ্তাহের আতঙ্কের ছবি। ইতিমধ্যেই পূর্ব ক্যারিবিয়ান তছনছ করেছে ঝড়। সেখানে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও বিধ্বংসী ক্ষয়ক্ষতির খবর আসা বাকি বলেই আশঙ্কা।

আরও পড়ুন: নিজেদের নামের জন্যই মুষড়ে পড়লেন এই দম্পতি

Advertisement

গত ১০০ বছরে এত ভয়ঙ্কর ঝড় কমই উঠেছে আটলান্টিক মহাসাগরে। ফ্লোরিডা উপকূল ছেড়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৫৬ লক্ষ বাসিন্দাকে। রয়েছেন কয়েক হাজার ভারতীয়ও। মার্কিন জরুরিকালীন পরিষেবার প্রধান ব্রক লং জানিয়েছেন, অভূতপূর্ব ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে উপকূলীয় ফ্লোরিডা সহ গোটা দেশ। আলবামা থেকে নর্থ ক্যারোলাইনা সবাইকেই সতর্ক করা হয়েছে। ভার্জিনিয়া ও আলবামাতেও জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয়েছে। ঝড়ের গতিমুখ পশ্চিমে হলেও নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নর আগামী সপ্তাহে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও হড়পা বানের জন্য মানুষকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ভিডিও-বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘ধ্বংসের নতুন ইতিহাস তৈরির ক্ষমতা রাখে ইরমা।’’ তিনি সরকার ও প্রশাসনের পরামর্শ মতো চলার জন্য অনুরোধ করেছেন সকলকে। পাম বিচে ট্রাম্পের বিলাসবহুল এস্টেটও খালি করে দেওয়া হয়েছে। দিনের শুরুতেই প্রেসিডেন্ট ত্রাণখাতে জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছেন। জাতীয় বন্যা বিমা প্রকল্পের সময়সীমা ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ইরমার দাপটে লণ্ডভণ্ড ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বারবুডা, সেন্ট মার্টিন এবং ব্রিটিশ ও মার্কিন ভার্জিন দ্বীপগুলি। বাড়ি-হাসপাতাল সবই মাটিতে মিশে গিয়েছে। উপড়ে পড়ে আছে গাছের পর গাছ। এর পরও বিপদ কাটেনি সেখানে। ফের আতঙ্কের প্রহর গুনছে দ্বীপগুলো। ধেয়ে আসছে ‘ক্যাটেগরি ৪’-এর আর একটি মহা-শক্তিশালী হারিকেন হোসে। প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ মাইল গতিবেগের ঝোড়ো হাওয়াকে সঙ্গী করে শনিবারই তার উপকূলে এসে পৌঁছনোর কথা।

নয়াদিল্লিতে শনিবার বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, হারিকেন-পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কথা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও। যে কোনও পরিস্থিতিতে সব রকমের সাহায্য পাবেন আটকে পড়া ভারতীয়রা। আমেরিকার ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার অবশ্য জানিয়েছে, কিউবায় বর্ষণের পর সামান্য শক্তিক্ষয় হয়েছে ইরমার। সে এখন ‘ক্যাটেগরি ৪’-এর ঝড়। কিউবা-র ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও বিশদে জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement