কিসওয়ার বিবি এবং তাঁর স্বামী ইফতিকার।
পাত্রীর বয়স ৭০। পাত্র ৩৭। পুরনো প্রেম। আর সেই প্রেমই পরিণতি পেল অবশেষে। আর এই প্রেমকাহিনি নিয়েই চর্চা তুঙ্গে।
পাত্রের নাম ইফতিকার। কোশোর বয়সেই বছর পঁয়ত্রিশের কিসওয়ার বিবির প্রেমে পড়েন তিনি। সেই প্রেমের কথা ইফতিকার বাড়িতে জানান। তাঁকে বিয়ে করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। কিন্তু সেই সময় পরিবার এই সম্পর্কে সম্মতি দেয়নি। ইফতিকার বাড়িতে জানিয়েছিলেন, যদি তিনি কিসওয়ার বিবিকে বিয়ে করতে না পারেন, তা হলে আর কোনও দিন বিয়েই করবেন না।
কিসওয়ার বিবিও ইফতিকারের প্রেমকে স্বীকার করেছিলেন। বাড়ির লোকেদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ইফতিকার তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে গোপনে দেখা করতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর অনেক সময় পেরিয়ে যায়। ইফতিকারের বাড়ি থেকে তাঁর সম্বন্ধ করে বিয়ে দেন। ছয় সন্তানের বাবাও হন তিনি। কিন্তু পুরনো প্রেমকে ভুলতে পারেননি ইফতিকার। পরিবারের চাপে কিসওয়ারকে বিয়ে করতে না পারলেও, বিয়ের পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন, সময় কাটাতেন। তত দিনে কিসওয়ারের বয়স আরও বেড়েছে। চুলে পাকও ধরেছে।
ইফতিকারের মতো কিসওয়ারও ধনুকভাঙা পণ করেছিলেন, বিয়ে যদি করতেই হয়, তা হলে ইফতিকারকেই করবেন। কিন্তু ইফতিকারের বিয়ে হয়ে যাওয়ায়, কিসওয়ার অবিবাহিতই থেকে যান। বিয়ের পরেও ইফতিকার তাঁর পুরনো প্রেমের কাছে বার বার ছুটে যাচ্ছেন, এ কথা তাঁর স্ত্রী জানতে পারেন। এমনকি তাঁর বাড়ির অন্য সদস্যরাও।
এর পরই ইফতিকারের স্ত্রী তাঁর স্বামীর ইচ্ছাপূরণের সিদ্ধান্ত নেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বছর সত্তরের কিসওয়ারের সঙ্গে বিয়ে দেন ইফতিকারের। ঘটনাটি পাকিস্তানের। আর এই প্রেমকাহিনিই এখন সে দেশের সবচেয়ে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।
বিয়েতে কিসওয়ার এবং ইফতিকার দু’জনেই খুশি। তাঁদের পুরনো প্রেম যে এ ভাবে পরিণতি পাবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন নববধূ কিসওয়ার। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, তিনি কি মধুচন্দ্রিমায় যেতে চান? উত্তরে কিসওয়ার বলেছেন, “অবশ্যই।” কোথায় যাবেন সে কথাও জানিয়েছেন কিসওয়ার। তিনি বলেন, “স্বামীকে নিয়ে করাচি এবং মারিতে যাব।”
সাংবাদিকরা ইফতিকারকে প্রশ্ন করেছিলেন, কোন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি থাকতে চান। ইফতিকার জানিয়েছেন, তাঁর পুরনো প্রেম এবং নতুন স্ত্রী কিসওয়ারের সঙ্গেই থাকতে চান। ইফতিকারের বাবা-মা ছেলের বিয়ে প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এত দিন ধরে দু’জনের প্রেম। অবশেষে বিয়ে। এই সম্পর্কে ক্ষতি কোথায়!