তদন্ত: ফুটপাথের উপর পড়ে রয়েছে সন্দেহভাজন বন্দুকবাজের দেহ। খতিয়ে দেখছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। বেলজিয়ামের লিয়েজে। ছবি: রয়টার্স।
সকাল তখন সাড়ে দশটা। রাতের আড় ভেঙে সবে ছন্দে ফিরছে বেলজিয়ামের শান্ত শহর লিয়েজ। আচমকা শহরের জমজমাট এলাকায় হামলা চালাল এক বন্দুকবাজ। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিন জনকে গুলি করে হত্যা করে সে। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে হামলাকারী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, এ দিন শহরের সিটি সেন্টার এলাকায় একটি ক্যাফের সামনে পাহারারত পুলিশকর্মীদের উপরে আচমকা ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আততায়ী। দুই পুলিশকর্মীকে এলোপাথাড়ি কোপানোর পরে তাঁদের বন্দুক ছিনতাই করে সে। সেই বন্দুক দিয়েই দুই মহিলা পুলিশ অফিসারকে গুলি করে মারে সে। এর পর সোজা হেঁটে পৌঁছয় পাশের পার্কিং লটে। সামনেই একটি গাড়ির ভিতরে বসেছিলেন বছর বাইশের এক যুবক। তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় হামলাকারী। ঘটনাস্থলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
সিটি সেন্টারের পাশেই লিওনি দে ওয়াহা স্কুল। এ বার সটান স্কুলের দিকেই হাঁটা দেয় হামলাকারী। একের পর এক গুলির আওয়াজে তত ক্ষণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে নিয়ে পিছু নিয়েছে পুলিশও। স্কুলের গেটের সামনেই কাজ করছিলেন এক মহিলা সাফাইকর্মী। তাঁকে সামনে পেয়ে মাথায় বন্দুক ধরে ওই আততায়ী। ওই মহিলাকে পণবন্দি করে পালিয়ে যাওয়ার ফন্দি এঁটেছিল সে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশের গুলিতে শেষ পর্যন্ত হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছেলে কোলে ইভাঙ্কার ছবি, ক্ষোভ টুইটারে
স্কুলে বন্দুকবাজের হানার খবর পেয়ে ছুটে এসেছিলেন অভিভাবকেরা। সাত বছরের এক পড়ুয়ার মা জুলি ফার্নান্ডেজের কথায়, ‘‘বাচ্চারা সকলেই নিরাপদ। স্কুলের পিছনের রাস্তা দিয়ে খুদে পড়ুয়াদের বার করে আনা হয়েছিল। তাই ওদের ভয়ঙ্কর দৃশ্যগুলো দেখতে হয়নি।’’
কোনও জঙ্গি সংগঠন এই ঘটনার দায় না নিলেও এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই মনে করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে হামলাকারীর পরিচয়। সোমবারই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল সে। মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ছোটখাটো অপরাধের তালিকায় নাম জড়ালও তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ ছিল না। অনুমান, জেলে থাকাকালীন কট্টর মৌলবাদের ভাবধারায় প্রভাবিত হয়েই এই হামলার ছক।