কাজ়াখস্তানের আকতু থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ভেঙে পড়েছে যাত্রিবাহী বিমান। ছবি: রয়টার্স।
কাজ়াখস্তানে ভেঙে পড়া বিমান থেকে ২৭ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের নিকটবর্তী হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। কাজ়াখস্তানের আকতু শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়েছে আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্সের ইআরজে-১৯০ বিমান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই বিমানে মোট ৬৭ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬২ জন যাত্রী এবং পাঁচ জন বিমানকর্মী। অন্তত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কাজ়াখস্তান প্রশাসন।
বিমানটির গন্তব্য ছিল রাশিয়া। স্থানীয় সময় ভোর ৩টে ৫৫ মিনিটে আজ়ারবাইজানের বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়া প্রদেশের গ্রজ়নির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ওই বিমান। কিন্তু মাঝ আকাশে পাইলট খবর পান, গ্রজ়নিতে ঘন কুয়াশা রয়েছে। তাই সেখানে বিমান অবতরণে সমস্যা হতে পারে। এর পর কাজ়াখস্তানের আকতুতে ওই বিমানের জরুরি অবতরণ করানোর চেষ্টা করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল বলে খবর। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই পাইলট বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান।
কাজ়াখস্তান সরকার জানিয়েছে, কাসপিয়ান সাগরের পূর্ব উপকূলে বিমান ভেঙে পড়ার পর যে আগুন লেগেছিল, দমকলকর্মীরা তা নিয়ন্ত্রণে আনেন। তার পর বিমানের মধ্যে থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। তিন জন শিশুও উদ্ধারের তালিকায় রয়েছে। তবে যে ২৭ জনকে বিমান দুর্ঘটনার পর উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের সকলের অবস্থাই ‘অত্যন্ত সঙ্কটজনক’।
ঘন কুয়াশার কারণেই জরুরি অবতরণের চেষ্টা কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। রাশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে অন্য কিছু কারণও উঠে এসেছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছিল। সেই কারণে পাইলট জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। অনেকে আবার দাবি করছেন, মাঝ আকাশে একঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কার ফলে বিমানটি জরুরি অবতরণ করাতে বাধ্য হন পাইলট।
কাজ়াখস্তানের বিমান দুর্ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, মাটিতে আছড়ে পড়ার আগে বেশ কয়েক মিনিট আকাশে ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে ঘুরপাক খেয়েছে বিমানটি। বিমানবন্দর থেকে কিছুটা দূরে আকাশে ক্রমাগত চক্কর কাটতেও দেখা যায়। অন্তত তিন মিনিট ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে ঘোরার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গোত্তা খেয়ে তা একটি খোলা জায়গায় আছড়ে পড়ে। মুহূর্তে তাতে আগুন ধরে যায়। অন্য একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, বিমানের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে একটি অংশ অবিকৃত রয়েছে। তার মধ্যে থেকে এক এক করে যাত্রীদের বার করে আনা হচ্ছে (ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাশিয়ায় নিজের কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছেন আজ়ারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। রুশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবারই দেশে ফিরছেন তিনি। দুর্ঘটনায় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন প্রেসিডেন্ট। পরিবারের প্রতিও জানিয়েছেন সমবেদনা।