হাফিজ সইদ
মুম্বই হামলার মূল চক্রী ও জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদকে আজ ফের গ্রেফতার করল পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন দফতর।
আগামী ২১ জুলাই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার আগে ওই গ্রেফতার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আজ সকালে হাফিজ যখন লাহৌর থেকে গুজরানওয়ালার আদালতে হাজিরা দিতে যাচ্ছে, তখন তাকে গ্রেফতার করে পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ। হাফিজ-সহ জামাত-উদ-দাওয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত ও আর্থিক নয়ছয়ের ২৩টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। হাফিজের হাতে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ফলাতে-ই-ইনসানিয়তের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে তা লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি সংগঠনের কাজে লাগানো হত বলে অভিযোগ।
গুজরানওয়ালার সন্ত্রাস-বিরোধী আদালত ৭ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরে হাফিজকে কোট লাখপত জেলে রাখা হয়েছে। যদিও ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, হাফিজকে সেফ হাউসে রেখে বিশ্বকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার পুরনো কৌশলই নিয়েছে ইসলামাবাদ।
সাউথ ব্লকের একটি সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে সন্ত্রাস-বিরোধী ভাবমূর্তি তুলে ধরার দায় রয়েছে ইসলামাবাদের। কারণ, আন্তর্জাতিক আর্থিক নজরদারি সংস্থার (এফএটিএফ) পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় রেখেছে। তারা যে সব সন্ত্রাস-বিরোধী পদক্ষেপ করতে বলেছে, তার কুড়ি শতাংশও করে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। অথচ আগামী মাসে এফএটিএফের শীর্ষ বৈঠক। পাকিস্তানকে তারা কালো তালিকাভুক্ত করলে আন্তর্জাতিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে ইমরান সরকারকে। সামনেই আইএমএফের বড় অনুদান পাওয়ার কথা রয়েছে পাকিস্তানের। কালো তালিকাভুক্ত হলে তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কিছু করে দেখানোর চাপ ছিল তাদের উপরে।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, মুম্বই হামলার পরে হাফিজের উপরে হামলার আশঙ্কায় তাকে গ্রেফতারির নামে নিরাপদে রেখে দিয়েছিল আইএসআই। বন্দি অবস্থাতেই ভারত-বিরোধী কাজ চালিয়ে যায় হাফিজ। এ ক্ষেত্রেও তার পুনরাবৃত্তি হবে বলে তাঁরা একপ্রকার নিশ্চিত।
বালাকোট কাণ্ডের পরে গত কালই যাত্রিবাহী বিমানের জন্য আকাশসীমা খুলে দেয় পাকিস্তান। তার পরে হাফিজের গ্রেফতারি। বিষয়টি নিয়ে দু’টি তত্ত্ব রয়েছে কূটনৈতিক শিবিরে। প্রথমত, হোয়াইট হাউসের নিরন্তর চাপ। দ্বিতীয়ত, লোকসভা ভোটের পরে পাক বিরোধিতার আবহ লঘু হয়ে আসছে। ইমরান ফোন করেছেন মোদীকে। করতারপুর করিডরের মতো আস্থাবর্ধক পদক্ষেপও হয়েছে।