পড়ে রয়েছে বল্গাহরিণের দেহ। সোশ্যাল মিডিয়া
জিঙ্গল বেল আর সান্টা ক্লজ়ের ছবি যাদের ছাড়া ভাবাই যায় না, মর্মান্তিক ভাবে মরতে হয়েছে সেই রেনডিয়ারদের (বল্গাহরিণ)। স্রেফ খেতে না পেয়ে। নরওয়ের মেরু অঞ্চলের সোয়ালবার দ্বীপপুঞ্জে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে ২০০-রও বেশি রেনডিয়ারের দেহ।
‘নরউইজিয়ান পোলার ইনস্টিটিউট’-এর তিন গবেষক জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জের আর খাবারের অভাবে এই বিপর্যয় ঘটেছে। তবে একসঙ্গে এক রেনডিয়ারের মৃত্যু এই প্রথম। গত ৪০ বছর ধরে সোয়ালবারের দ্বীপপুঞ্জে বন্য রেনডিয়ারদের চরিত্র নিয়ে গবেষণা করছেন ওই প্রতিষ্ঠানের তিন প্রতিনিধি। তুন্দ্রা অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র বোঝার জন্য এই পশুর গতিবিধি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক গবেষকের মতে, ‘‘এত প্রাণীর একসঙ্গে মৃত্যু খুবই উদ্বেগের। জলবায়ু পরিবর্তন কী ভাবে প্রকৃতির উপরে প্রভাব ফেলছে, এটা তার ভয়ঙ্কর উদাহরণ।’’ তিনি জানিয়েছেন, সোয়ালবার অঞ্চলে গত ডিসেম্বরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পশুরা খাবার জোগাড় করতে পারেনি।
গবেষকরা মনে করছেন, ওই অঞ্চলে ঘাস খায় রেনডিয়ারেরা। শীতকালে তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে মাটি খুঁড়ে খাবার জোগাড় করে। তুষারের ভিতরে খুঁড়তে পারে ওরা, কিন্তু কঠিন বরফের চাঁই ভাঙতে পারে না। তাঁদের বক্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তনের সামান্য প্রভাবেই সভ্যতা থেকে দূরে বন্যপ্রাণীদের উপরে কী প্রভাব পড়ে, তার উদাহরণ হতে পারে এই ঘটনা। ‘নরউইজিয়ান ইনস্টিটিউট ফর নেচার রিসার্চ’-এর বিশেষজ্ঞরা আবার বলছেন, শুধু তুন্দ্রা নয়, মেরু অঞ্চল, এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার বাস্তুতন্ত্রেও রেনডিয়ারের ভূমিকা রয়েছে। ‘‘মেরু অঞ্চলে তৃণভোজী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম রেনডিয়ার। এ ভাবে ওরা শেষ হয়ে গেলে এবং না খেতে পেলে বাস্তুতন্ত্রই পাল্টে যাবে।’’