মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ায় সেনাবাহিনীর সদর দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে বোলসোনারোর সমর্থকেরা। ভেঙে দেওয়া হয়ছে তাঁদের অস্থায়ী শিবির। ছবি: রয়টার্স।
নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে সরিয়ে দেশে সেনাশাসন চালুর দাবিতে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত অন্তত দেড় হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে ব্রাজিলে। এরা অতি দক্ষিণপন্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর অনুগামী বলেই পরিচিত। যে পরিত্যক্ত সেনা ছাউনিকে শিবির বানিয়ে আন্দোলনকারীরা তাণ্ডব চালিয়েছে, সেটি ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। এদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগও উঠেছে।
হামলার পরের দিনই প্রেসিডেন্ট লুলা, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, চেম্বার অব ডেপুটিস এবং ফেডেরাল সেনেটের প্রশাসনিক কর্তারা একযোগে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তাঁরা এই সন্ত্রাসকে সমর্থন করছেন না। হামলার পরে ব্যক্তিগত ভাবে প্রাসা দোস ত্রেস পোদেরেসে এসেছিলেন ৭৭ বছরের প্রেসিডেন্ট। এ দিনও স্পেন-সহ বিশ্বের একাধিক দেশ অতি দক্ষিণপন্থীদের এই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। সকলেরই অভিযোগ, এ ভাবে নির্বাচিত সরকারকে ফেলার চেষ্টা নিন্দনীয়।
বোলসোনারোর সমর্থকদের হামলার প্রতিবাদে গর্জে সোমবার থেকেই দেশের নানা প্রান্তে পথে নেমেছেন লুলার সমর্থকেরা। ব্রাসিলিয়া, রিয়ো ডি জেনেরো, সাও পাওলো-সহ বহু শহরে মিছিল করেছেন তাঁরা। অনেকেই লুলার সমর্থনে লাল পোশাক পরে এসেছিলেন। তাঁদের মুখে ছিল স্লোগান— ‘সেনা অভ্যুত্থানে যারা উস্কানি দিচ্ছে, তাদের ক্ষমা নেই’। এমনকি বোলসোনারোকে জেলে ভরার দাবিও উঠেছে মিছিল থেকে। ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি ভবনগুলিতে হামলা চালিয়ে একাধিক প্রাচীন ও বহু মূল্যবান শিল্পকর্ম ধ্বংস করেছে দাঙ্গাকারীরা। যার ফলে দেশবাসীর ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
এর মধ্যেই সোমবার ফ্লরিডার অরল্যান্ডোর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বোলসোনারো। টুইটারে হাসপাতালের বিছানা থেকে নিজের ছবি পোস্ট করেছেন। কূটনীতিকদের একাংশ এবং বোলসোনারো বিরোধীদের দাবি— নিজের দেশ তো বটেই, অন্য দেশগুলিরও ক্ষোভ দেখে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই অতি দক্ষিণপন্থী নেতা। তাঁকে আমেরিকায় থাকার অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে জো বাইডেন প্রশাসনের অন্দরে। ইতিমধ্যেই রবিবারের হামলার কড়া সমালোচনা করেছে আমেরিকা। লুলার সঙ্গে ব্যক্তিগত ফোনালাপে তাঁকে ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন। এ বার, বাইডেনেরই ক্ষমতা রয়েছে বোলসোনারোকে দেশ থেকে বার করে দেওয়ার। তবে তিনি বা তাঁর প্রশাসন কী করবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ব্রাজিলের তরফেও বোলসোনারোকে সে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে উচ্চবাচ্যকরা হয়নি।