কম্বোডিয়ায় থাকা ভারতীয়েরা। ছবি: সংগৃহীত।
১৪ জন ভারতীয় ‘সাইবার ক্রীতদাস’কে প্রতারকদের কবল থেকে উদ্ধার করছে কম্বোডিয়া পুলিশ। যদিও এখনও দেশে ফিরতে পারেননি তাঁরা। ভারতে ফেরার জন্য সে দেশের ভারতীয় দূতাবাসের কাছে আবেদন করেছেন। সবুজ সঙ্কেত মিললেই তাঁরা চলে আসবেন ভারতে।
মাস কয়েক ধরেই খবরের শিরোনামে কম্বোডিয়াতে কাজ করতে যাওয়া পাঁচ হাজারের বেশি ভারতীয়। নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই সব ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। মার্চ মাসের গোড়ার দিকে ২৫০ জন ভারতীয়কে দেশে ফেরায় কেন্দ্র। তার পরই অনেক ভারতীয় কম্বোডিয়া থেকে দেশে ফেরার জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন। সম্প্রতি ১৪ জন ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
এই ১৪ জনের মধ্যে বেশির ভাগই উত্তরপ্রদেশে এবং বিহারের বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কম্বোডিয়ার স্থানীয় পুলিশ তাঁদের প্রতারকদের কবল থেকে উদ্ধার করেছে। বর্তমানে তাঁরা রয়েছেন একটি এনজিওতে। সেখান থেকেই ভারতে ফেরার জন্য মোদী সরকারের কাছে আবেদন করেন তাঁরা।
কম্বোডিয়াতে প্রতারকদের জাল অনেক বিস্তৃত। মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের কম্বোডিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তাঁদের জোর করে সাইবার প্রতারণার কাজে নিযুক্ত করা হয়। সেই চক্র বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে আছে। তাদের কাজই হল বিভিন্ন দেশ থেকে লোক জোগাড় করে কম্বোডিয়ায় পাঠানো।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কম্বোডিয়ায় পৌঁছনো মাত্রই চাকরির খোঁজে আসা মানুষদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট। তার পরই তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ করানো হয়। প্রতি দিন বেঁধে দেওয়া হয় কাজের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে চলে অত্যাচার। ছুটি তো মেলেই না, উল্টে খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিনে ১২ ঘণ্টা তো কাজ করতেই হয়, না হলে নিস্তার নেই।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় বিশ্বে। ভারতের গোয়েন্দারা খোঁজ নিতে শুরু করেন এ দেশে কোথায় কোথায় এই চক্র ছড়িয়ে রয়েছে। এই চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি বছরেই আট জনকে গ্রেফতার করেছিল ওড়িশার রৌরকেলার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গত বছর ডিসেম্বরে ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ এক অফিসার অভিযোগ করেন, তাঁর থেকে সাইবার প্রতারণা করে ৭০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেই মামলার তদন্তের সূত্র ধরেই এই চক্রের হদিস মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।