‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ বিমান কিনতে চান? খুব শিগগিরই সেই সুযোগ পাবেন। ১২টি বিমান নিলামে তুলতে চলেছে বাংলাদেশ। যে কোনও দেশের নাগরিক, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা ওই বিমান কিনতে পারেন।
১২টি বিমানের বেশ কয়েকটি শেষবার উড়েছিল ২০১২ সালে। পরিত্যক্ত অবস্থায় গত ৯ বছর ধরে সেগুলি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পড়ে রয়েছে।
বিমানগুলি বাংলাদেশেরই বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়েকটি বেসরকারি উড়ান সংস্থার। এর মধ্যে আটটি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের, দু’টি রিজেন্ট এয়ারওয়েজের, একটি জিএমজি এয়ার লাইন্স এবং আরেকটি এভিয়ানা এয়ারলাইন্সের।
দীর্ঘ দিন বিমানবন্দরের পার্কিং ফি বাবদ এই সংস্থাগুলির কাছ থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০০ কোটি টাকা পাওনা আছে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। বকেয়া টাকা শোধ না করায় বিমানগুলি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
সিভিল অ্যাভিয়েশন আইন মেনেই নিলামে তোলা হচ্ছে বিমানগুলি। তবে আশানুরূপ দাম না পেলে কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হবে ১২টি বিমান।
বিমানগুলির রেজিস্ট্রেশন আগেই বাতিল হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে সেগুলি সরিয়ে নেওয়ার নোটিসও দেওয়া হয়েছে বহুবার। কিন্তু তারপরও বিমানগুলি সরানো হয়নি। এমনকি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চিঠির কোনও জবাবও দেয়নি সংস্থাগুলি।
তবে শাহজালাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শুধু বকেয়া টাকা মেটানোই এই নিলামের উদ্দেশ্য নয়। বিমানবন্দরের জায়গা দখল করে বছরের পর বছর পড়ে থাকা পরিত্যক্ত বিমানগুলিকে সরাতেও চাইছেন তাঁরা।
ঢাকার এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম তৌহিদুল আহসান। এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি করা হচ্ছে। বিমানগুলিকে সরানো গেলে বিমানবন্দরের জায়গা বাড়ানো যাবে।
শাহজালালের কার্গো ভিলেজের জায়গায় গত আট বছর ধরে দখল করে পড়ে রয়েছে ১০টি বিমান। তৃতীয় টার্মিনালের জন্য কার্গো ভিলেজের জায়গাটি খালি করা দরকার বলে জানিয়েছেন তৌহিদুল।
ঢাকার জিএমজি এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়ে যায় ২০১২ সালে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১৬ সালে। ২০২০-র মার্চে বন্ধ হয়ে যায় রিজেন্ট এয়ারলাইন্সও। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই বেশ কিছু রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করতে শুরু করেছিল সংস্থাগুলি। তখন থেকে কিছু কিছু বিমান পার্ক করে রাখা ছিল শাহজালালে।
পার্কিং চার্জ এবং সার চার্জ বাবদ এখন জিএমজি এয়ার লাইন্সের কাছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬০ কোটি টাকা, রিজেন্টের কাছে ২০০ কোটি এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে ১৯০ কোটি টাকা পাওনা আছে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। এর মধ্যে অবশ্য একমাত্র ইউনাইটেড এয়ারওয়েজই বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত।
আপাতত বিমানগুলি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। তৌহিদুল জানিয়েছেন, নিলামের প্রক্রিয়া নির্ধারণের কমিটিও তৈরি হয়েছে। এমনকি কীভাবে নিলাম হবে তার প্রক্রিয়া এবং সুপারিশও প্রায় শেষের পথে।