Coronavirus

‘বেঁচে থাকব ঠিক করে নিয়েছিলাম বলেই বেঁচে আছি’

এপ্রিলে সংক্রমণ হওয়ার পর বহুদিন আইসোলেশনে ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে বড় দিদির মত আগলে রাখছেন হাসপাতালের সবাইকে।

Advertisement

ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য

নিউ জার্সি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ১৬:৪১
Share:

সিলভিয়া গোল্ডশোল। ছবি: সংগৃহীত

সেই কবেই সমুদ্রপারের বুড়োর উপন্যাসে হেমিংওয়ে বলে গিয়েছেন— ‘মানুষ হেরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়নি (But man is not made for defeat)।’ ঘোর বিপদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হওয়ার দুঃসাহস মানবজাতিই দেখিয়েছে বারবার। আজন্মকাল যাদের আমরা বাতিলের দলে রেখে দিয়েছি, সেই বৃদ্ধ মানুষগুলোই যেন আজ অদম্য জীবনীশক্তিকে হাতিয়ার করে নতুন করে বাঁচতে শেখাচ্ছে আমাদের এই করোনার কালবেলায়। যমের দুয়ারে কাঁটা বিছিয়ে আসা তেমনই একজনের সঙ্গে সম্প্রতি, দৈনন্দিন প্রেস ব্রিফিংয়ের সময়, আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন নিউ জার্সির গভর্নর ফিলিপ মারফি। যেখানে অতিমারির সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চলে বৃদ্ধদের দুর্বল হয়ে আসা শরীরের উপর, সেখানে ১০৮ বছরের সিলভিয়া গোল্ডশোলের বেঁচে ফেরা যেন রূপকথার। ১০ হাজার লাশ কাঁধে নিয়ে ধুঁকতে থাকা নিউ জার্সিতে এই জীবনের গল্পটাই বাস্তব হয়ে উঠুক এমনটাই চাইছি আমরা। মারফির ভাষায়, “এক দুরন্ত জীবন, প্রাণশক্তিতে ভরপুর, দুরন্ত মনোবল, আমাদের বাকি সকলের কাছে এক দুর্দান্ত উদাহরণ”। তবে অতিমারীকে তুড়ি মেরে জীবনে ফেরার অভিজ্ঞতা সিলভিয়ার জীবনে এই প্রথম নয়। সম্ভবত আমেরিকার সর্বাধিক বয়সের করোনা বিজয়িনী দেখেছেন স্প্যানিশ ফ্লু, দুটি বিশ্বযুদ্ধ, গ্রেট ডিপ্রেশন এমন সব ভয়ানক আতঙ্কের দিনগুলি।। স্পেনের ১১৩ বছরের বৃদ্ধা হয়ত বিশ্বের নিরিখে সর্বপ্রথমে, কিন্তু সিলভিয়ার এই আরোগ্যসংবাদ এখন নিউ জার্সির হাঁড়ির খবর। “বেঁচে থাকব ঠিক করে নিয়েছিলাম বলেই বেঁচে আছি”— এমনটাই বলছেন সিলভিয়া সেরে ওঠার সিক্রেট হিসেবে। শুধু তাই নয় স্বয়ং গভর্নর মারফির ফোন গিয়েছে তাঁর কাছে। মজা করে মারফি বলেছেন নিজের নির্বাচনী প্রচারের নেতৃত্ব সিলভিয়ার হাতে তুলে দিতে চান তিনি। বিন্দুমাত্র না ঘাবড়ে মজা করেছেন বৃদ্ধাও। রাজি হয়েছেন অক্লেশে।

Advertisement

হঠাত্ পাওয়া এই খ্যাতি সিলভিয়ার বিশ্রামের বেজায় ঘাটতি ঘটালেও ক্লান্ত নন তিনি। এপ্রিলে সংক্রমণ হওয়ার পর বহুদিন আইসোলেশনে ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে বড় দিদির মত আগলে রাখছেন হাসপাতালের সবাইকে। জন লেননের মত সিলভিয়া মনে করেন, ভালবাসাই একমাত্র আকাঙ্ক্ষিত হতে পারে রুক্ষ সময়ে। প্রসঙ্গত নিউ মেক্সিকোর ১০৮ বছরের আর একজন বৃদ্ধও সম্প্রতি সেরে উঠেছেন করোনার সংক্রমণ থেকে, যিনি সিলভিয়ার চেয়ে বয়েসে কিছু মাসের ছোট। সময়ের নিরিখে ধূসর হয়ে আসা এই মানুষগুলোই যেন আশার আসমানী রংয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে হতাশার দলে ভিড়ে যাওয়া আমাদের প্রজন্মকে। জার্সি শোর খুলে যাচ্ছে। খুলেছে পার্ক। লকডাউন উঠছে ধীরে ধীরে। সংক্রমণ নয়, আরও একবার ফুসফুসে আমরা ভরে নিচ্ছি উদ্দীপনা, অফুরান প্রাণবায়ু।

Advertisement

আরও পড়ুন: চালু হবে মেট্রো পরিষেবা? খুলবে মল? চতুর্থ দফার লকডাউন নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

আরও পড়ুন: ফের রেকর্ড! ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি ৪৯৮৭, দেশে করোনা আক্রান্ত ছাড়াল ৯০ হাজারের গণ্ডি

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement