ডেভিড গুডঅল
১০৪ বছরের জন্মদিনে তাঁর ইচ্ছা একটাই— ‘‘আমি মরতে চাই। এ নিয়ে শোকের কিছু নেই। বরং কেউ মরতে চাইলে তাঁকে বাধা দেওয়াটাই দুঃখের।’’
তাই বিমানের ‘বিজনেস ক্লাসে’ সুইৎজারল্যান্ডের বাসেলে যাচ্ছেন উদ্ভিদবিদ ডেভিড গুডঅল। আগামী ১০ মে সেখানে একটি ক্লিনিকে নিষ্কৃতি-মৃত্যু হবে তাঁর।
বাঁচতে চান না কেন? দুরারোগ্য ব্যাধি তো নেই। ডেভিডের জবাব, ‘‘বড় অসুখ নেই ঠিকই। কিন্তু শরীর ভেঙে যাচ্ছে। জীবন দুঃসহ। এ ভাবে বাঁচতে চাই না। খুব কষ্ট পাচ্ছি।’’ অস্ট্রেলিয়ায় নিষ্কৃতি মৃত্যু নিষিদ্ধ। সেকারণে বাড়িতে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ডেভিড। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর আচরণ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তার পরই কন্যা-নাতি-নাতনিদের ছেড়ে বাসেল যাওয়ার সিদ্ধান্ত। নিষ্কৃতি-মৃত্যুর সমর্থক এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে সেখানে যাচ্ছেন ডেভিড। ২০ বছর ধরে ওই সংস্থার সদস্য তিনি। ‘বিজনেস ক্লাসে’র টিকিটের অর্থ দিয়েছেন শুভানুধ্যায়ীরা।
১৯১৪ সালের এপ্রিলে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর কয়েক মাস আগে, লন্ডনে জন্ম হয়েছিল ডেভিডের। পড়িয়েছেন আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৯ সালে অবসরের পর ৫০০ জনের লেখার সংগ্রহ ‘ইকোসিস্টেমস অব দ্য ওয়র্লড’ সম্পাদনা করেছেন। সেই মানুষটির এখন একটাই কথা, ‘‘কেউ যদি নিজেকে স্বেচ্ছায় শেষ করে দিতে চায়, সেটাই তো যথেষ্ট, অন্য কেউ তাতে নাক গলাবে কেন? আমার মতো বৃদ্ধের পূর্ণ নাগরিক অধিকার থাকা উচিত। যার মধ্যে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অধিকারও রয়েছে।’’ আর এক বন্ধুর কথায়, ‘‘ডেভিড এখন নিশ্চিন্ত। সব কিছু ঠিকঠাক চলছে। অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে আলোর রেখা দেখেছেন তিনি।’’