এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে তলানিতে ঠেকেছিল শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার। সেই সময়েই দেশটির আর্থিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। সেই আশঙ্কারই ক্রমশ সত্যি হয়ে উঠছে।
অন্ধকারে ডুবেছে শ্রীলঙ্কা। ছবি রয়টার্স।
নেই ডিজ়েল, পেট্রোলেও ঘাটতি, ফলস্বরূপ বৃহস্পতিবার কার্যত অচল হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার পরিবহন ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, ২ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশটিতে এ বার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জ্বালানির মারাত্মক ঘাটতি থাকার কারণে এ বার থেকে কম পক্ষে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। সরবরাহ বন্ধ রাখার সময় বেড়ে হতে পারে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্তও।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে তলানিতে ঠেকেছিল শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার। সেই সময়েই দেশটির আর্থিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। সেই আশঙ্কারই ক্রমশ সত্যি হয়ে উঠছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জেনারেটর চালানোর মত প্রয়োজনীয় ডিজ়েল না থাকার ফলেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ পর্ষদ। পর্ষদের চেয়ারম্যান এম এম সি ফার্দিনান্দো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী দু’দিনে জ্বালানি পাওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদি তা পাওয়া যায় তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জ্বালানির সংকট ছাড়াও জলবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকেও খুব কম বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মোট বিদ্যুতের ৪০ শতাংশের বেশি উৎপাদিত হয় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে দেশটির বেশির ভাগ জলাধারই এখন শুকনো। যার প্রভাব পড়ছে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে।
জ্বালানি না থাকায় পরিবহনও প্রায় বন্ধ। পরিবহন মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে বাসগুলি সারাইয়ের জন্য গ্যারেজে রাখা ছিল সেগুলি থেকে জ্বালানি নিয়ে যানবাহন সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই কথা বলেছেন দেশটি বেসরকারি বাস সংস্থার কর্ণধারও। তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে পর্যাপ্ত জ্বালানি না পেলে শুক্রবারই বন্ধ করে দিতে হবে সমস্ত গণপরিবহণ। শহরের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে সার সার গাড়ি। জ্বালানির অভাবে সেগুলোকে ছেড়ে রেখে গিয়েছেন শহরবাসী। ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি তলানিতে ঠেকায় হাসপাতালগুলিতে চূড়ান্ত অব্যবস্থা।