খুলনায় বুলবুলের তাণ্ডবে ভেঙে পড়ছে বাড়ি। ছবি: রয়টার্স।
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভে আটকে শক্তি অনেকটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও রবিবার ভোররাতে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশের নয়টি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তছনছ করল ঘুর্ণিঝড় বুলবুলি। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। কয়েক হাজার কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ধান ও অন্য ফসল নষ্ট হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ হেক্টর জমির।
রবিবার ভোর রাতে ১২০ থেকে ১২৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়ে বুলবুল, ঘুর্ণিঘড়ের যে নামটি দিয়েছে পাকিস্তান। তবে বাংলাদেশের বন দফতরের কর্তাদের কথায়, সুন্দরবনের ঘন ম্যানগ্রোভ সেই ঝড়ের প্রাথমিক ধাক্কা রুখে না দিলে ক্ষয়ক্ষতি মাত্রা ছাড়াতে পারত। এর আগে ২০০৯-এ ১২০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া ঘুর্ণিঝড় আয়লা-কে সুন্দরবন অনেকটা রুখে দিতে পারলেও তার দু’বছর আগে আসা সিডর-কে রুখতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগে আসা ঝড়কে রুখে দিতে পারে সুন্দরবন। কিন্তু সিডর আছড়ে পড়েছিল ২৬০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে। ঝড়ের দাপটে তছনছ হয়ে যায় ম্যানগ্রোভ। মারা যান বাংলাদেশের প্রায় তিন হাজার মানুষ। বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয় ফসল ও বাড়িঘরের।
এ দিন সুন্দরবনে গতি হারানোর পরে স্থলভাগে উঠে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে বুলবুল। বিপদের আশঙ্কায় গত কয়েক দিনে নিচু এলাকা থেকে ২১ লক্ষ ৭ হাজার মানুষকে ৫ হাজার ৫৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছিল প্রশাসন। তাদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের বন্দোবস্তও করা হয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যা থেকে তাঁরা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও কক্সবাজারের বিমানবন্দরগুলিতে কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার থেকে লঞ্চ চলাচলও শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন:১১ প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশে বুলবুল, শক্তি খুইয়ে পরিণত গভীর নিম্নচাপে