ছবি:এপি
লকডাউনের রাশ সবে আলগা হতে শুরু করেছে ব্রিটেনে। সপ্তাহান্তে বার্মিংহাম শহরের বার আর পাবগুলিতে তাই নিশিযাপনের ভিড় জমিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার রাত তখন সাড়ে বারোটা হবে। আচমকা ভিড়ের মধ্যে ছুরি নিয়ে আততায়ীর হামলায় তাল কাটল রাতের। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুরুতর জখম হন দু’জন। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলাও রয়েছেন। আরও পাঁচ জনের আঘাত লেগেছে। তবে তাঁরা আপাতত বিপন্মুক্ত বলেই জানা গিয়েছে। তবে কেন ওই হামলা, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, এক নয়, ওই রাতে একাধিক ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে শহর জুড়ে। মোটামুটি রাত সাড়ে বারোটা থেকে আড়াইটের মধ্যে ঘটনাগুলি ঘটে। প্রথম হামলার খবর মেলে শহরের হার্স্ট স্ট্রিট এলাকায়।
জমজমাট ওই রাস্তার দু’ধারে বার আর পাবের সারি। করোনা পরিস্থিতিতে ক্লাব আর পাবের বাইরের টেবিলগুলিতেই ভিড় জমেছিল বেশি। এমনই একটি ক্লাবের এক মহিলা কর্মী জানান, রাতে কাজ শেষ হওয়ার পরে সহকর্মীদের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিলেন তিনি। আচমকা চিৎকার, চেঁচামেচি আর ভয়ার্ত আওয়াজ শুনতে পান। অন্যদের মতো প্রথমটায় তিনিও কিছু বুঝতে পারেননি। ভেবেছিলেন হয়তো বচসায় জড়িয়ে পড়েছে কেউ। পরে ভুল ভাঙে। রাস্তায় তত ক্ষণে ভিড় জমে গিয়েছে। হুড়োহুড়ো আর ধাক্কাধাক্কির মাঝেই ছুরি হামলার খবরটা পান। সে দিন রাতে এর পাশাপাশি লিভারি স্ট্রিট, ব্রোমসগ্রোভ স্ট্রিট-সহ একাধিক জায়গায় ছুরি হামলার খবর পায় পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে আততায়ী এক জনই বলে মনে করছে পুলিশ। তাকে চিহ্নিত করে খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। জঙ্গি-যোগ বা সন্ত্রাস-যোগের কোনও প্রমাণ না-মিললেও বিষয়টি এখনই উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা। এই ঘটনাকে ইতিমধ্যেই ‘বড়সড় হামলা’ বলে ঘোষণা করেছে পুলিশ-প্রশাসন।
হামলার জায়গাগুলি ঘিরে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। কারও কাছে সেই ঘটনা-সংক্রান্ত কোনও সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল রেকর্ডিং বা কোনও তথ্য থাকলে, তা পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বার্মিংহাম পুলিশের এক শীর্ষকর্তা স্টিভ গ্রাহাম বলেছেন, ‘‘মধ্যরাতের ওই তাণ্ডব অত্যন্ত ভয়াবহ, আকস্মিক এবং খুবই দুঃখের।’’ পাশাপাশি বাসিন্দাদের আস্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা সব সময়েই প্রস্তুত। সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছে এবং কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত, তা দ্রুত খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি।’’