বছর শেষের উৎসব প্রায় ম্লান ফ্রান্সে। ছবি সংগৃহীত।
ফের রেকর্ড ভাঙল ফ্রান্স। গত কাল ১ দিনে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার সংক্রমণ!
বছর শেষের উৎসব প্রায় ম্লান ফ্রান্সে। আজ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী তিন সপ্তাহ সমস্ত নাইটক্লাব বন্ধ থাকবে। ৬ ডিসেম্বর থেকেই ১৬০০ ক্লাব বন্ধ রয়েছে। উৎসবের এই সময়ে প্রচুর লোক ঘুরতে-বেড়াতে যান। তাতে সংক্রমণ বাড়তে পারে আশঙ্কা করেই কড়াকড়ি শুরু করেছিল প্রশাসন। কিন্তু রক্ষা হল না তাতেও। গত কাল এক দিনে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮০৭ জনের করোনা ধরা পড়েছে। শনিবার প্রথম করোনা সংক্রমণ লক্ষ ছাড়িয়েছিল ফ্রান্সে। তার তিন দিনের মাথায় সংক্রমণ দেড় গুণেরও বেশি। ফ্রান্সের পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘ব্যবসায়ী এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টি বুঝতে পারছি। কিন্তু উপায় নেই। সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হবে।’’ অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জেরাল দারমান্যাঁ জানিয়েছেন, নতুন বছর পালন করতে কোথাও ভিড় বা জমায়েত করা যাবে না। রাস্তায় বেরোতে হলে মুখে মাস্ক থাকা আবশ্যিক। রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাওয়া বা মদ্যপান করা যাবে না। এ জন্য নজরদারি বাড়ানো হবে। রাস্তায় নামানো হবে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি টিকাকরণের হার ফ্রান্সে। টিকা নেওয়ার যোগ্য জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তার পরেও এই অবস্থা। ভ্যাকসিন পাস নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনা চলছে। আলোচনা সফল হলে রেস্তরাঁ, সিনেমা হল, জাদুঘর বা কোনও প্রদর্শনীতে ঢুকতে হলে ভ্যাকসিন পাস থাকা বাধ্যতামূলক করা হবে এবং সেই মর্মে আইন আনবে সরকার।
টিকা-কেন্দ্রে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রয়টার্স
বর্তমানে করোনা ভরকেন্দ্র হয়ে রয়েছে ইউরোপ। ব্রিটেনের অবস্থাও খারাপ। দৈনিক সংক্রমণ এ দেশেও লাখের আশপাশে থাকছে। ইটালিও চিন্তায়, ৫০ হাজারের আশপাশে দিনে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে সে দেশে। তুলনায় এশিয়ায় এখনও সে ভাবে ওমিক্রনের প্রভাব পড়েনি।
চিন তাতেও কড়াকড়ির শীর্ষে। করোনা-শূন্য নীতি থেকে সরতে অনড় তারা। চিনের শিয়ান শহরে দৈনিক সংক্রমণ দেড়শো-দু’শো হতেই গৃহবন্দি করা হয়েছে বাসিন্দাদের। এখনও পর্যন্ত কোনও ওমিক্রন আক্রান্ত ধরা পড়েনি। এক সপ্তাহ হল শিয়ানে লকডাউন চলছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ বাসিন্দার বাড়ি থেকে বেরোনো নিষেধ। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পরিবারের কোনও এক জন বেরোতে পারবেন। লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরোলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জাপানে সংক্রমণ তেমন না বাড়লেও নতুন করে করোনা-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বর্ষবরণের আনন্দ করতে অসংখ্য পর্যটকের ঢল নেমেছে বিমানবন্দর ও সড়ক পথে। চিন্তায় প্রশাসন। টোকিয়া ও ওসাকা প্রশাসন সাধারণ মানুষকে আর্জি জানিয়েছে, উৎসব হোক, কিন্তু ছোট করে। বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশ জুড়ে। পর্যটকদের পরীক্ষা করিয়ে নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। জাপানের স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, ‘‘ভয় এখানেই, লোকজন পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করছেন, কিন্তু যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে না।’’