কোরপান শা।
এনআরএস হাসপাতালের ছাত্রাবাসে কোরপান (কুরবান) শাহ-কে পিটিয়ে মেরে ফেলার প্রতিবাদে ডাকা মিছিলে ভিড় হলো না মোটে। ‘ছাত্র সমাজ এবং নাগরিক সমাজ’ নামে একটি সংস্থা ডাক দিয়েছিল এই মিছিলের। যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শহরের বুকে একের পর এক মিছিলে যেমন ছাত্রছাত্রী এবং বিশিষ্ট লোকেদের ভিড় ভেঙে পড়েছিল তার শতকরা এক ভাগকেও শনিবার পাশে পেলেন না মিছিলের উদ্যোক্তারা।
ফেসবুকের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ নাগরিকদের এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি ফেসবুকে অন্তত ৫০০ জন জানিয়েছিলেন, তাঁরা আসবেন। কিন্তু এলেন মাত্র জনা তরিশ। শুক্রবার একটি চিকিৎসক সংগঠনের ডাকা প্রতিবাদ সভাতেও সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো কম।
ফেসবুকে ঘোষণামতো ঠিক ছিল এ দিন বেলা ১টায় কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত হয়ে মিছিল যাবে এনআরএস পর্যন্ত। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সেখানে গিয়ে দেখা গেল কোথায় প্রতিবাদীরা? আর পাঁচ দিন যেমন থাকে এ দিনের কলেজ স্কোয়ারও তেমনই। শেষমেশ ৩টে নাগাদ টেনেটুনে জনা তিরিশকে এক জায়গায় দেখা গেল। কিন্তু সেখানে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা কোথায়? ছাত্র বলতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ৪ জন পড়ুয়া, আর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ৬-৭ জন। এই মিছিল যাবে এনআরএস পর্যন্ত! বাতিল হল গন্তব্য। কলেজ স্কোয়ার থেকে বেরিয়ে মহাত্মা গাঁধী রোড ঘুরে ফের কলেজ স্কোয়ারেই ফরল নামকেওয়াস্তে সেই মিছিল।
হতাশ উদ্যোক্তাদের এক জন বললেন, “যাদবপুর-কাণ্ডে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যেমন প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন, আমরা ভেবেছিলাম, এই ক্ষেত্রেও সে রকম ফুঁসে উঠবে ছাত্র সমাজ।” এ দিনের মিছিলে অংশ নেওয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অরুমিতা মিত্রের যুক্তি, “প্রেসিডেন্সিতে একটা আন্দোলন চলছে। আমরা অনেকেই সেখানে ছিলাম। তাই এই মিছিলে আমরা সে ভাবে যোগ দিতে পারিনি।” যদিও প্রেসিডেন্সিতেও এ দিন যাদবপুরের ছেলেমেয়েদের দেখা যায়নি। মিছিলে যোগ দেওয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর খেদোক্তি, “আমরা যতই প্রতিবাদী হই না কেন, নিচুতলার মানুষের প্রতি এটাই আমাদের দৃষ্টভঙ্গি।”