কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের এক বছর পরেও স্কুলশিক্ষিকার পদে এক প্রার্থীকে নিয়োগের ব্যবস্থা করেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। সেই মামলায় দু’বারের তলবের পরে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার পুলিশের ঘেরাটোপে হাইকোর্টে হাজির হলেন কমিশনের চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
ইতিহাসের শিক্ষিকা-পদে প্রার্থী হিসেবে সুপ্রিয়া প্রামাণিক নামে এক তরুণী ২০০৯ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ পরীক্ষা দেন। কিন্তু ফল বেরোলে দেখা যায়, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ওই প্রার্থী তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী ইতিহাসের প্রথম পত্রের খাতা দেখতে চান। উত্তরপত্রে দেখা যায়, তিনি ৪৮.৫০ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু কমিশনের ফোটোকপিতে দেখা যায়, তাঁর নম্বর ৪৪.১। তিনি মামলা করেন।
আবেদনকারিণীর আইনজীবী অমলবরণ চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টে বলেন, ওই প্রার্থী তথ্য জানার আইনে খাতা দেখেছিলেন বলেই সত্য প্রকাশিত হল। কিন্তু কত ছাত্রছাত্রীর জীবনে এই ধরনের বিপত্তি ঘটেছে, কে বলতে পারে! তিনি প্রশ্ন তোলেন, সেই সব প্রার্থীর কী হবে? এর পরেই কমিশনের আইনজীবী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্বীকার করে নেন, ওই প্রার্থীর মোট নম্বর থেকে কিছু নম্বর বাদ গিয়েছে, যেটা আইনসিদ্ধ নয়। বিচারপতি দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলাটির নিষ্পত্তি করে দিয়ে বলেন, তিন মাসের মধ্যে শিক্ষিকার পদে নিয়োগের জন্য সুপ্রিয়াকে নাম সুপারিশ করতে হবে। ২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারি বিচারপতি এই নির্দেশ দিলেও ২০১৪-র ফেব্রুয়ারির শেষ দিনেও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি।
ওই প্রার্থী বারবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত অবমাননার দায়ে কমিশনের প্রধানকে দু’-দু’বার হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি হাজির হননি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে আদালতে হাজির করানোর জন্য বিধাননগর কমিশনারেটকে নির্দেশ দেন বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত।
এ দিন এসএসসি-র চেয়ারম্যান সুবীরেশবাবু আদালতের কাছে ভুল স্বীকার করে নেন এবং জানান, সুপ্রিয়াকে ইতিমধ্যে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি সুপারিশপত্র নিয়েও গিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি শিক্ষিকার পদে যোগ দিতে পারবেন।