প্রকাশ কারাটের উপস্থিতিতেই এ বার বহিষ্কৃত নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে। সিপিএম যখন রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা অবস্থায় বামপন্থী এবং সম মনোভাবাপন্ন বিভিন্ন দলের সঙ্গে একজোট হয়ে আন্দোলনের কথা বলছে, তখন সোমনাথবাবুর মতো ব্যক্তিকে কেন দূরে রেখে দেওয়া হবে, এই প্রশ্নই উঠেছে সম্মেলনে।
ইউপিএ-১ আমলে পরমাণু চুক্তি বিতর্কের সময়ে বামপন্থীরা মনমোহন সিংহ সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার পরেও সোমনাথবাবু লোকসভার স্পিকার পদ ছাড়তে না চাওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করেছিলেন কারাটেরা। তার পরে বঙ্গ সিপিএম অবশ্য নানা ভাবে সোমনাথবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছে। সরাসরি দলের না হলেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁকে আমন্ত্রণও জানিয়েছে। লোকসভার প্রাক্তন স্পিকারের বহিষ্কারের প্রায় সাড়ে ছ’ বছর পরে তাঁকে দলে ফেরানোর জন্য সওয়াল উঠল সিপিএমের অন্দরে।রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর পেশ করা খসড়া রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্টের উপরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজ্য সম্মেলনে। সেই বিতর্কে অংশ নিয়েই এ দিন রাতে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, বামপন্থী ঐক্যকে প্রসারিত করতে গিয়ে শুধু বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্য গড়লেই হবে না। উপযুক্তদেরও কাছে টানতে হবে। সে ক্ষেত্রে হাতের কাছেই সোমনাথবাবুর মতো ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিতে কেন উদ্যোগী হবেন না সিপিএম নেতৃত্ব? কারাট বা দলের নেতৃত্বের তরফে কারও অবশ্য এ দিন জবাব দেওয়ার সুযোগ ছিল না। আর সোমনাথবাবু তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, তাঁর যথেষ্ট বয়স হয়েছে। রাজনৈতিক টানাপড়েন নিয়ে তাঁর আর নতুন করে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। তবে বামপন্থীদের মধ্যে অনেকে যে তাঁর কথা এখনও ভাবেন, এটা শুনতে ভাল লাগে।
বেশ কয়েকটি জেলার প্রতিনিধিরা এ দিনের আলোচনায় দাবি করেছেন, থানা বা মহকুমাশাসকের দফতরে দাবিপত্র জমা দেওয়ার মতো প্রতীকী কর্মসূচি নিলে চলবে না। স্থানীয় মানুষের দাবিদাওয়ার পাশে দাঁড়িয়ে প্রশাসনকে বাধ্য করতে হবে কথা শুনতে। সেই মতো আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে হবে।