রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় ভূগর্ভস্থ সেচের জলে উঠে আসছে আর্সেনিক। চাষের কাজে সেই জল ব্যবহারের ফলে এই বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়তে পারে বোরো ধান বা সব্জিতেও। শুক্রবার বিধানসভায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাজেট-বিতর্কে এ কথা জানান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কলকাতার একাংশেও ভূগর্ভের জলে আর্সেনিকের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। এ কথা জানিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “এ কথা বললে অনেকে আপত্তি করেন। কিন্তু রোগ চাপা দিয়ে সুরাহা হবে না। চিহ্নিত করে সেটা সারানোর ব্যবস্থা করতে হবে।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার আগামী বছরে নদিয়াকে আর্সেনিক-মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। কিন্তু গ্রামীণ কিছু বাধ্যবাধকতার জন্য তখনও সেখানে সব গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পরিস্রুত জলের সংযোগ দেওয়া যাবে না। মুর্শিদাবাদ জেলাকে আর্সেনিক-মুক্ত করতে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প রূপায়িত হবে আর্সেনিক-পীড়িত অন্যান্য জেলাতেও।
২০২০ সালের মধ্যে রাজ্যে আর্সেনিক, ফ্লোরাইড, লোহা ও লবণযুক্ত এলাকার জলকে ওই সব উপাদান থেকে মুক্ত করে সার্বিক ভাবে গ্রামীণ এলাকায় নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সুব্রতবাবু। মন্ত্রী-বিধায়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই কাজে সকলের সাহায্য দরকার। কারণ, অনেক সময় প্রকল্প গড়ার জন্য জমি পাওয়া যায় না। স্থানীয় ভাবে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। বাম জমানার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এটা লজ্জার কথা যে, আগের সরকার ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও রাজ্যের মানুষের জলের সমস্যার সমাধান করেনি।”
সুব্রতবাবু জানান, পুজোর আগেই তাঁর দফতর বোতলে পানীয় জল সরবরাহ শুরু কর দেবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দ অনুযায়ী ওই বোতলবন্দি জলের নাম হবে ‘প্রাণধারা’। তাঁর দাবি, বাজারে যত বোতলবন্দি জল রয়েছে, সব ক’টির থেকে ভাল হবে ‘প্রাণধারা’। কারণ, এটা ভূগর্ভ থেকে তোলা জলে তৈরি হবে না। এটা গঙ্গার জল।