নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হওয়া সত্ত্বেও পাঁচ বছরে চাকরি পাননি এক প্রতিবন্ধী যুবক। উপরন্তু জুটেছে লাগাতার হয়রানি। সেই প্রার্থীর দায়ের করা মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর উত্তরাঞ্চলের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একে তো ওই প্রার্থীর প্রতিবন্ধকতা যাচাই করে রিপোর্ট পেশ করতে দেরি হয়েছে। তার উপরে ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও এসএসসি-কর্তা আদালতে হাজির হননি। এই অবস্থায় তাঁকে ধরে আনার জন্য বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত।
দেবাশিস রায় নামে এক প্রতিবন্ধী যুবক ২০০৯ সালে ইংরেজির শিক্ষক হওয়ার জন্য এসএসসি-র পরীক্ষা দেন এবং তাতে সফল হন। তাঁর প্রতিবন্ধকতা ৫৫ শতাংশ। দেবাশিসবাবু উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা হলেও বর্ধমান থেকে পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন করেছিলেন। সফল হওয়ার পরে এসএসসি বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর হাইস্কুলে ইংরেজির শিক্ষক-পদে নিয়োগের জন্য তাঁর নাম সুপারিশ করে। কিন্তু তিনি এখনও নিয়োগপত্র পাননি। কারণ, তাঁর প্রতিবন্ধকতার সার্টিফিকেট বা শংসাপত্রটি ঠিক কি না, এসএসসি তা জানতে চায় তাদের উত্তরাঞ্চল দফতরের চেয়ারম্যানের কাছে। কিন্তু তার পরে পাঁচ বছর কেটে যাওয়া সত্ত্বেও তার জবাব মেলেনি।
দেবাশিসবাবুর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, ২০১০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এসএসসি-র উত্তরাঞ্চল দফতর ওই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি তৈরি করে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত চার বার ওই প্রতিবন্ধী যুবককে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। আবার মালদহে এসএসসি-র উত্তরাঞ্চল দফতরেও ডেকে পাঠানো হয়েছে বারবার। কিন্তু এত সবের পরেও দেবাশিসবাবুর প্রতিবন্ধী বিষয়ক শংসাপত্র ঠিক না বেঠিক, এসএসসি-র সদর দফতরে তা জানানো হয়নি। সুরাহার আশায় দেবাশিসবাবু আদালতের দ্বারস্থ হন।
গত ৪ মার্চ বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এসএসসি-র উত্তরাঞ্চলের চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলেন। তার পরে ১৮ এবং ২০ মার্চ তাঁকে ডেকে পাঠানো হলেও ওই এসএসসি-কর্তা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেন। ২০ মার্চ বিচারপতি দার্জিলিঙের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন, এসএসসি-র উত্তরাঞ্চলের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে ১১ এপ্রিল কোর্টে হাজির করাতে হবে।