অভিযোগ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী। তার জবাবে পাল্টা প্রশ্ন তুলে তৃণমূলকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিল বিজেপি!
ফেসবুকে পোস্ট করে মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি অসংলগ্ন কথা বলছে, চরিত্র হনন করছে। এমনকী, মহিলাদেরও ছাড় দিচ্ছে না। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যদি খোলসা করে জানাতেন বিজেপি কী ভাবে মহিলাদের অপমান করছে, তা হলে ভাল হতো! যদি উদাহরণ দিয়ে দেখাতে পারেন আমি বা আমাদের দলের কোনও নেতা ব্যক্তি কুত্সা করেছি, মহিলাদের অসম্মান করেছি, তা হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নেব। আমরা নীতির রাজনীতি করি, ব্যক্তি আক্রমণ করি না।” এই সঙ্গেই শাসক দলের উদ্দেশে রাহুলবাবুর বক্তব্য, “আমরা তো বারবার দেখছি, তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরাই মহিলাদের সম্পর্কে কুবাক্য বলছেন, অশালীন মন্তব্য করছেন। আর দল তাঁদের আড়াল করছে!”
বিজেপি-র চ্যালেঞ্জ নিয়ে মহিলাদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের উদাহরণ বুধবার পেশ করতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংসদ তাপস পালদের কেন দলীয় নেতৃত্ব আড়াল করেছেন, তার সদুত্তরও মেলেনি। বরং, তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যখন ফেসবুকে লিখে অভিযোগ করেছেন, তখন রাহুলবাবুরও উচিত ফেসবুকেই তার উত্তর দেওয়া! তবে রাহুলবাবুদের এটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, কারণে-অকারণে সমস্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ওঁরা আক্রমণ করছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছেন, আবার রাতে শুতে যাওয়ার সময়েও একই কাজ করছেন।”
কিন্তু রাহুলবাবু তো নির্দিষ্ট করে নাম জানাতে বলেছেন? সরাসরি জবাব এড়িয়ে পার্থবাবুর পাল্টা দাবি, “আসলে বিরোধীদের স্বভাবই চরিত্রহনন করা! সিপিএম ইন্দিরা গাঁধীকে ডাইনি, রাজীব গাঁধীকে বোফর্সের মামলায় চোর বলেছিল, সনিয়া গাঁধীকে গৃহিনী বলেছিল। সিপিএমের পথেই বিজেপি যাচ্ছে!”
তৃণমূলের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়ার পাশাপাশিই রাহুলবাবু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বাম জমানায় আকছার মুখ্যমন্ত্রীদের কুশপুতুল দাহ করা হতো। কিন্তু সাড়ে তিন বছরের অপশাসন সত্ত্বেও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মহিলা বলেই তাঁরা মমতার কুশপুতুল দাহ করেননি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, বিজেপি-র কাজকর্মে জরুরি অবস্থার ছায়া দেখা যাচ্ছে। রাহুলবাবু এ দিন পাল্টা ফিরিয়ে দিয়েছেন, “জরুরি অবস্থার ভুক্তভোগী উনি হলেন কোথায়? উনি তো কংগ্রেসে ছিলেন, যারা জরুরি অবস্থা জারি করেছিল! এত দিন ওঁর মুখে জরুরি অবস্থার বিরোধিতা শোনাও যায়নি!”