ছবি: পিটিআই
ঠিক এক বছর আগে এপ্রিলে বণিকসভার অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসে তিনি বলেছিলেন, দীর্ঘ ৩৪ বছরের শাসনে বামেরা যা খানাখন্দ করে গিয়েছে, সে সব মেরামত করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও সময় দিতে হবে। এই এপ্রিলে তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে মূল্যায়ন বদল করলেন নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সময় পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তাঁর হতাশার কথাই জানিয়ে দিলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।
মঙ্গলবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী দাবি করেছেন, বাম জমানার বেহাল দশা কাটিয়ে ওঠার কোনও লক্ষণই মমতার আমলে দেখা যাচ্ছে না! ইদানীং প্রতিটি নির্বাচনী সভায় মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন তৃণমূল নেত্রী। তাই ভোটের পরে তাঁকে পাশে পাওয়া যাবে না বুঝেই কি পাল্টা কঠোর হচ্ছেন মোদী? এমন ধারণা নস্যাৎ করে মোদী দাবি করেছেন, মমতা এনডিএ-তে আসবেন না বলে তাঁরা আগে থেকেই ধরে রেখেছিলেন।
ভোট-প্রচারে প্রথম বার এ রাজ্যে এসে ব্রিগেডের সমাবেশে মোদী বলেছিলেন, বাংলায় মমতার রাজত্ব চলছে। বাংলার মানুষ যদি এ বার কেন্দ্রের ক্ষমতা বিজেপি-কে দেন, তা হলে তাঁদের দু’হাতেই লাড্ডু থাকবে! মোদীর সেই মন্তব্যকে মমতার প্রতি ‘নরম বার্তা’ বলেই ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে শিলিগুড়িতে প্রচারে এসে সেই মোদীই রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন। অপশাসন নিয়ে সরব হয়েছেন, দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন। সাক্ষাৎকারে মোদীর কাছে তাই প্রশ্ন ছিল, প্রথম বার হাতে লাড্ডু আর পরের বার ছড়ি তার মানে নির্বাচনী অঙ্কই কি তাঁর মাথায় কাজ করছে? প্রথমে তৃণমূল নেত্রীর জন্য বার্তা থাকল। পরে তৃণমূলের দিক থেকে উল্টো প্রতিক্রিয়া আসছে বুঝে সুর বদল হল? জবাবে গোড়ায় রসিকতা করে মোদী বলেন, “আমি লাড্ডুর কথা বলেছিলাম। রসগোল্লা বললে বোধহয় ভাল হতো! কিন্তু কেউ তখন আমায় বলেননি, রসগোল্লা বলা উচিত ছিল!” তার পরেই মমতা সম্পর্কে তাঁদের মূল্যায়ন জানিয়ে দেন মোদী।
বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর কথায়, “মমতাজি এনডিএ-র দিকে আসবেন না, এটা পরিষ্কার ছিল। এটা নিয়ে আমার কোনও দ্বিধা ছিল না। আর আমার মনে কোনও আশঙ্কাও নেই।” মোদীর বক্তব্য, “তবে আমি বিশ্বাস করি, বামফ্রন্ট যে হাল করে রেখেছিল, তার থেকে বাইরে বেরোতে মমতাজি যথেষ্ট সময় পেয়েছেন। কিন্তু সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই মমতাজি’র সম্পর্কে রাগের থেকে আমার হতাশাই বেশি!”
মোদীর এমন মন্তব্যে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রতিক্রিয়া, “বিজেপি বাংলায় রসগোল্লাই পাবে! টিভি চ্যানেলের সাউন্ড বাইটের জন্য ওঁর (মোদী) এ সব কথা ঠিক আছে! কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলছে! শিশু মৃত্যু, গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য বা শিক্ষার মতো সামাজিক উন্নয়নের মাপকাঠিতে বাংলা যে গুজরাতের চেয়ে এগিয়ে আছে, আমরা আগেই তা দেখিয়েছি।” ডেরেকের আরও দাবি, “অর্থনৈতিক মাপকাঠিতেও গুজরাতের প্রকৃত অবস্থা কী, সেটাও তুলে ধরব।”
বেলুড়ের স্মৃতি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
এক সময়ে বেলুড় মঠে স্বামী আত্মস্থানন্দজির কাছে অনেক দিন ছিলেন বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। স্বামী আত্মস্থানন্দজির এক গুরুবন্ধুর কাছেও বেশ কিছু দিন ছিলেন বলে এবিপি আনন্দকে এক সাক্ষাৎকারে জানান তিনি। তাঁর জীবনের ওই অধ্যায় সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মোদী বলেন, “ওখানকার সবাই আমার খুব প্রিয়। এখন তাঁদের সঙ্গে আর দেখা করতে পারি না। সে সব পুরনো দিনের কথা মনে পড়লে কষ্ট হয়। তখন আমি আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।” মোদী জানান, ‘বিবেকানন্দ’ ছবিটি তাঁর খুব ভাল লেগেছে। তাঁর কথায়,“আমাদের যুব সমাজ চেয়েছে, আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের বার্তা পৌঁছে দিতে। ছবিতে অলৌকিক কিছু দেখানো হয়নি। এক সমাজসেবকের জীবন যেমন সহজ সরল হয়, তাই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।”