ভিন্-রাজ্যে আলু পাঠানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলতে রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করল ওড়িশা সরকার। ওড়িশার মুখ্যসচিব জি সি পতি এ রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে অনুরোধ করেছেন, ‘বিষয়টি দেখতে’। এ দিকে, দু’দিন কর্মবিরতি চলার পরে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে বর্ধমানে বৈঠকে বসছেন। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্তও বৈঠকে নেওয়া হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে নেওয়া আলুর উপরে ওড়িশার নির্ভরতা কম নয়। প্রতিদিন সে রাজ্যে গড়ে আলু লাগে আড়াই থেকে তিন টন, যার বেশির ভাগ সরবরাহ করা হয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে। গত অন্তত দশ দিন তা কার্যত বন্ধ। তাই দুশ্চিন্তায় সে রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অথচ, টাকা দিয়েও পর্যাপ্ত আলু মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে শেষমেষ ওড়িশার মুখ্যসচিব বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন।
এ রাজ্যেও ইতিমধ্যেই সরকারি স্তরে আলু ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছে, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করতে। ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র রাজ্য নেতা লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য যেহেতু আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে, তাই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এ ব্যাপারে অন্য কী করা হবে, তা ঠিক করতেই আলোচনায় বসছি।”
আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট চললেও এ দিন পর্যন্ত কলকাতার বাজারে আলু নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। ব্যবসায়ীরা জানান, শহরের বিভিন্ন বাজারে খুচরো বিক্রেতাদের কাছে যা আলু মজুত রয়েছে, তা দিয়ে আরও দু’দিন তাঁরা টেনে দিতে পারবেন। কিন্তু শনিবার থেকে পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়ে অধিকাংশ খুচরো আলু বিক্রেতা ধন্দে।
দক্ষিণ কলকাতার আজাদগড়, বাঘাযতীন, যাদবপুর, গড়িয়াহাট এবং উত্তর কলকাতার মানিকতলা, কোলে মার্কেট, পোস্তা, শোভাবাজারে খুচরো বিক্রেতারা এ দিন জ্যোতি আলু ২২-২৩ টাকা এবং চন্দ্রমুখী ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, সিঙ্গুর, তারকেশ্বর, আরামবাগ থেকে শহরে পাইকারি আলুর গাড়ি শেষ ঢুকেছিল সোমবার। মানিকতলা বাজারের সম্পাদক প্রভাত দাস বলেন, “এ ভাবে চলতে থাকলে আলুর দাম আরও বাড়বে।”
এই পরিস্থিতিতে এ দিন বর্ধমানে আলু ব্যবসায়ীদের বৈঠকের উপরে নজর থাকবে অনেকেরই।