ভাইপোর কঠিন মাঠে এ বার লড়াইয়ে কাকা

এ বার টক্কর কাকা-ভাইপোর! অমিত শাহদের মোকাবিলায় শহিদ মিনারে সভা করতে গিয়ে সোমবারই মাঠ ভরাতে পারেননি ভাইপো তথা তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শহিদ মিনারেই আগামী ১৩ ডিসেম্বর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সামনে রেখে সভা করবেন ‘যুবরাজে’র কাকা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:১০
Share:

কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ বার টক্কর কাকা-ভাইপোর!

Advertisement

অমিত শাহদের মোকাবিলায় শহিদ মিনারে সভা করতে গিয়ে সোমবারই মাঠ ভরাতে পারেননি ভাইপো তথা তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শহিদ মিনারেই আগামী ১৩ ডিসেম্বর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সামনে রেখে সভা করবেন ‘যুবরাজে’র কাকা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু সভা করাই নয়, যেখানে ভাইপো মাঠ ভরাতে হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে তাঁদের সভায় প্রায় দু’ লক্ষ লোক হবে বলে বুক ঠুকে জানিয়েছেন কার্তিক।

তা হলে শহিদ মিনারে সভায় বিপুল জনসমাগম দেখিয়ে তাঁর সাংসদ ভাইপোকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন কার্তিক? তাঁর জবাব, “একদমই তা নয়।” দক্ষিণ কলকাতার এক সমাজসেবী সংগঠনের আহ্বায়ক কার্তিক জানান, গত বছরই নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণার দাবি নিয়ে পথে নেমেছিলেন। তিনি জানান, এই দাবি নিয়ে ১৯৯৭ সালে সংসদে সরব হয়েছিলেন তাঁর ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ বার সেই নেতাজিকেই ‘রাষ্ট্রনেতা’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নিয়ে মাঠে নামছেন কার্তিক ও তাঁর সংগঠন।

Advertisement

তাঁর ভাইপো একে সাংসদ, তার উপর তৃণমূলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হয়ে শহিদ মিনার ভরাতে ব্যর্থ হয়েছেন। দলীয় এক সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর ডাকা সমাবেশে লোকজন কেন কম হয়েছে তা নিয়ে ‘যুবরাজ’ দলের শীর্ষ নেতাদের শুনিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সেখানে শহিদ মিনারে দু’লাখি সমাবেশ তিনি কি করতে পারবেন? কার্তিক বলেন, “পারবো। রাজনৈতিক সংগঠনের সীমাবদ্ধতা থাকে। কিন্তু আমাদের তো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। আমরা তো ভোটের দিকে তাকিয়ে সমাবেশ করছি না। আর নেতাজিকে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা করেন, তাঁর নামে সমাবেশে উদ্দীপনা, উন্মাদনা থাকাটা তো স্বাভাবিক।”

এই আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে কার্তিকের সংগঠন বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে। সেখানে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন গায়ক সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। শহিদ মিনারে সমাবেশ করেই তাঁদের আন্দোলন যে শেষ নয় তা জানিয়েছেন কার্তিক। দাবি আদায়ে তাঁরা দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্না থেকে শুরু করে বিগ্রেডে সমাবেশ, এমনকী বাংলা বন্ধও ডাকতে পারেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দিদির নির্দেশেই কি মোদী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে কার্তিকরা বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন? তাঁর উত্তর, “কারও উপর চাপ সৃষ্টি হবে কি, হবে-না জানিনা। সুভাষপ্রেমী হিসেবে আন্দোলনে নেমেছি। কারণ, কী কংগ্রেস সরকার, কী মোদী সরকার সুভাষচন্দ্রকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দিচ্ছেন না। কোনও সরকারই নেতাজিকে স্বীকৃতি দিতে উদাসীন। তারই প্রতিবাদে আন্দোলন।” কিন্তু তাঁর দিদি তো ‘বন্ধের বিরোধী’, তিনি কী এই ব্যাপারে ‘বন্ধ’ মানবেন? ভাইয়ের ছোট্ট জবাব, “সেটা তো পরের কথা!”

মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে তাঁরা শহিদ মিনারের সমাবেশে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নেতাজি প্রতিষ্ঠিত ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানাবেন। ভাইপোর সভায় ‘দিদি’ আসবেন বলে গুঞ্জন ছিল। দিদি কিন্তু আসেননি। কার্তিক বলেন, “আমন্ত্রণ তো জানিয়েছি। এখন দেখি!” দিদি যদি ভাইয়ের সভায় আসেন, তা হলে তো কার্তিকের কেল্লা ফতে!

ভাইপোর সভায় আশানুরূপ লোক হয়নি, এখন দেখার কাকার সভা ‘হিট’ করে কিনা!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement