কলকাতায় প্রচার শুরু করেই নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ তুললেন মমতা।
উত্তর কলকাতায় তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে মঙ্গলবার বড়বাজারে প্রথম সভা করেন মমতা। ভিন্ রাজ্য থেকে আগত মানুষকে মমতা ‘মেহমান’ বলায় রবিবার শ্রীরামপুরে প্রচারে এসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মোদী। সোমবার মোদীকে পাল্টা আক্রমণ করে নবান্নে একপ্রস্ত জবাবও দিয়েছিলেন মমতা। প্রত্যাশিত ভাবেই বড়বাজারের মতো বিভিন্ন ভাষাভাষীর এলাকায় প্রচারে গিয়ে মমতা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “এখানে তো আপনারা কেউ ৩০ বছর, কেউ ৪০ বছর বা কেউ আমার জন্মের আগে থেকে রয়েছেন। কারও কোনও অসুবিধা হয়েছে?” জমায়েত সমস্বরে ‘না’ প্রত্যুত্তর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মমতা বলে ওঠেন, “আমরা ভাগ বাঁটোয়ারা করে ভোট করি না। আমার জীবন চলে গেলেও বাংলাকে ভাগ হতে দেব না।”
বড়বাজার ছাড়াও, রাজাবাজার ও বেলেঘাটায় এ দিন সভা করেন মমতা। তিন জায়গাতেই প্রার্থী সুদীপবাবুকে পাশে নিয়ে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএমকে ‘এক বৃন্তের তিনটে কুসুম’ বলে উল্লেখ করেন। রাজ্যে তাঁর সরকার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের সহাবস্থানকে সম্মান দেয় বলে দাবি করে মমতা বলেন, “আমি ছটপুজোয় এখানে ছুটি দিয়েছি। আপনি (মোদী) কি ছুটি দিয়েছেন? আমি এবং আমার সব মন্ত্রী ছটপুজোয় গঙ্গায় যাই।” তিনি যে ছটপুজোয় ঠেকুয়া, ঈদে সিমাই খান, কালীমন্দিরের পাশাপাশি গুরুদ্বার বা হনুমানমন্দিরেও যে তাঁর অবাধ যাতায়াত, তা-ও সভায় উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উল্টোপাল্টা বলে হিন্দুস্তানকে টুকরো টুকরো করে দিতে চাইছে। সবাইকে নিয়ে দেশ চালাতে হয়।”
রাজাবাজারের সভায় মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব দেন তাঁর সরকার সংখ্যালঘু উন্নয়নে কী কাজ করেছে তার উপরে। তিনি তাঁর সরকারের ‘সাফল্যে’র তালিকা দিয়ে বলেন, “উর্দু ভাষাকে মর্যাদা দিয়েছি। আমি ভাঙড়ে সংখ্যালঘুদের জন্য মেডিক্যাল কলেজ বানাচ্ছি। অনেক ইংরেজি মাদ্রাসা বানিয়েছি। আই অ্যাম ফর অল।” বেলেঘাটায় কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়েই ছিল সিপিএমের সমালোচনা। বেলেঘাটায় সিপিএমের সংগঠন একসময়ে শক্তিশালী ছিল। এ বার লোকসভা ভোট ঘোষণার পর থেকেই সেখানে বেশ কিছু সিপিএমের দফতর ভাঙচুরও হয়েছে। সেই বেলেঘাটার মানুষের মন জয় করতে এ দিন মমতা বলেন, “এখানকার মানুষ তৃণমূলের মা। এখান থেকেই প্রথম তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন প্রয়াত অজিত পাঁজা। তাঁকে আপনারা জয়ী করেছিলেন। এ বারও তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।’’