৩২ বছর বাদে কিরণময় নন্দ বামফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। সেইসঙ্গে লোকসভা ভোটে রাজ্যে চারটি আসনে সমাজবাদী পার্টির (সপা) প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন, “তৃণমূলকে বাদ দিয়ে দিল্লিতে কোনও তৃতীয় বিকল্প সরকার গঠন সম্ভব নয়।”
সপার একমাত্র বিধায়ক চাঁদ মহম্মদ সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তারপরেও সপা বামফ্রন্টে ছিল। ব্রিগেড সমাবেশ মঞ্চ থেকেও সপা নেতৃত্ব বক্তৃতা করেন। কিন্তু সপাকে একটিও আসন না ছাড়ার প্রতিবাদে বামফ্রন্টের ২৯ বছরের মন্ত্রী কিরণময়বাবু দলবল নিয়ে কেবল ফ্রন্ট ছেড়েই বেরিয়ে এলেন না, প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করে দিলেন। এ ঘটনায় নিঃসন্দেহে বামফ্রন্ট চাপের মধ্যে পড়ল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব জানান, “সপা এখনও লিখিত ভাবে ফ্রন্ট ছাড়ার কথা জানায়নি। বিষয়টি নিয়ে ১২ মার্চ বামফ্রন্টের বৈঠকে আলোচনা হবে।”
রায়গঞ্জে সপা প্রার্থী ব্যবসায়ী সুদীপরঞ্জন সেন। ইনি বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ পর্যটনের দায়িত্বে আছেন। উত্তর মালদহে দলের প্রার্থী মিলন দাস জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। এছাড়া, বীরভূমে প্রশান্ত রায় এবং বারাসতে যুব নেতা কৌশিক দাশগুপ্ত প্রার্থী হয়েছেন। দু’মাস আগে কিরণবাবু সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দুটি আসনে লড়ার কথা বলেছিলেন। যদিও লিখিত ভাবে বামফ্রন্টকে কোনও চিঠি দেননি।
এ দিন কিরণময়বাবু বলেন, “আমরা যখন দু’মাস আগে ঘোষণা করেছিলাম, তখনই আলিমুদ্দিনের বোঝা উচিত ছিল, আমরা আসন চাইছি। কিন্তু আমাদের কথা বিবেচনার মধ্যে আনা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্ট ছেড়ে একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তাঁর এই সিদ্ধান্তে তৃণমূলের কি সুবিধা হল না? জবাবে কিরণময়বাবু বলেন, “কার সুবিধা হল, তা দেখা আমাদের কাজ নয়। আমরা কংগ্রেস এবং বিজেপির নীতিগত বিরোধী। এই দুই দলকে বাদ দিয়ে দিল্লিতে জোট সরকার গঠন করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “দিল্লিতে যদি অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি সরকার গঠন করতে হয়, তা হলে কোনও ভাবেই তৃণমূলকে বাদ দিয়ে করা সম্ভব নয়।” তাঁর নেতা মুলায়ম সিংহ এখনও বামেদের সঙ্গেই রয়েছেন। বাম ও তৃণমূল দু’পক্ষকেই কি একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব? কিরণবাবুর জবাব, “কে থাকলে কে থাকবে না, এ সব তাদের ব্যাপার। ভোটের পরে দেখা যাবে।”