বাজেট নিয়ে রেলের চিঠির জবাব দেয়নি রাজ্য

এর আগে বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে যাওয়ার প্রযোজন বোধ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে রেল বাজেটে রাজ্যের দাবি-দাওয়া জানতে চেয়ে রেল বোর্ডের চিঠিরও জবাব দিল না রাজ্য সরকার। এ বার রেল বাজেটে রাজ্য কী চায়, তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়ে ২২ দিন আগে চিঠি দিয়েছিল রেল বোর্ড। বাজেট ঘোষণার বাকি আর কয়েকটা দিন। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনও উত্তর পায়নি তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪৫
Share:

এর আগে বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে যাওয়ার প্রযোজন বোধ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে রেল বাজেটে রাজ্যের দাবি-দাওয়া জানতে চেয়ে রেল বোর্ডের চিঠিরও জবাব দিল না রাজ্য সরকার।

Advertisement

এ বার রেল বাজেটে রাজ্য কী চায়, তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়ে ২২ দিন আগে চিঠি দিয়েছিল রেল বোর্ড। বাজেট ঘোষণার বাকি আর কয়েকটা দিন। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনও উত্তর পায়নি তারা।

রেল বাজেটের আগে প্রতিটি রাজ্য কোন প্রকল্প অগ্রাধিকার দিতে চায়, বা কী কী নতুন ট্রেন চায়, তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। রেল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বেশির ভাগ রাজ্যই এ ব্যাপারে তাদের দাবি-দাওয়া ও প্রস্তাব রেল মন্ত্রকের কাছে গুরুত্ব দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

গত ২১ জানুয়ারি রেল বোর্ডের তরফে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার চিঠি পাঠিয়ে আসন্ন বাজেটে রাজ্য কোন কোন প্রকল্পে অগ্রাধিকার দিতে চায়, তা জানাতে বলেন। নবান্ন সূত্রে ওই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করা হলেও ওই চিঠির উত্তর দেওয়া হয়েছে কি না, জানাতে পারেনি। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই চিঠির ফাইল পরিবহণ দফতর থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। কিন্তু তার পরে সেই ফাইল আর পরিবহণ দফতরে ফিরে আসেনি। রেল বোর্ডের কর্তারা জানান, তাঁরাও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রেল প্রকল্পের অগ্রাধিকারের ব্যাপারে কোনও প্রস্তাব পাননি।

রাজ্য সরকারের এই গা-ছাড়া মনোভাবের পরিপ্রেক্ষিতে রেলের এক কর্তা বলেন, “এ রাজ্যে এক গুচ্ছ প্রকল্পের মধ্যে যেগুলি আশু প্রয়োজন, সেগুলি তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আর তিনি তা নিয়ে গা করছেন না।” চিঠি না দেওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ও দলীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “অনেক আলোচনা-বৈঠক হয়েছে। এখন বিজেপিকে কাজ করে দেখাতে হবে। শেষ বাজেটে বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সব প্রকল্পের বরাদ্দ কমে যাওয়ায় তৃণমূলের সাংসদেরা তখনই বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন। নতুন করে আর বলার কী আছে!”

রাজ্যের জন্য এ বছর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি কী কী?

রেল সূত্রে খবর, এ রাজ্যে রেলের প্রথম লক্ষ্য ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পটি চালু করা। রয়েছে গড়িয়া-বিবাদি বাগ, নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর, গড়িয়া-এয়ারপোর্ট মেট্রো প্রকল্পগুলি। “কিন্তু কোথায় কী! রাজ্য তো কোনও সাড়াশব্দই দিচ্ছে না,”বলছেন রেলের এক শীর্ষকর্তা। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, দেশের বেশির ভাগ রাজ্যই তাদের পছন্দের প্রকল্পগুলি জানিয়েছে। সেই পছন্দগুলির কার্যকারিতা বিচার করে বাজেটে জায়গা দেওয়া হবে।

বাজেটে কী হতে পারে? রেল বোর্ড সূত্রে খবর, এ বছর নতুন কোনও প্রকল্প ঘোষণা করতে চাইছে না মন্ত্রক। আগে ঘোষিত প্রকল্পগুলি শেষ করার উপরেই বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। একই ভাবে রুটে অত্যধিক ট্রেন হয়ে যাওয়ায় দেশের পাঁচটি মূল মেট্রো সিটিতেও নতুন করে আর কোনও ট্রেনের ঘোষণা না-করা হতে পারে।

রেল কর্তাদের বক্তব্য, বাজেট তৈরি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। রাজ্যগুলি তাদের পছন্দ আগেভাগে না জানালে সেগুলিকে বাজেটে ঠাঁই দেওয়াটা মুশকিল। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথা ভাল করেই জানেন। তবু রাজ্য সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিল না। পশ্চিমবঙ্গের কাছ থেকে এখনও জবাব না পেয়ে রেল মন্ত্রক বাধ্য হয়ে রাজ্যের তিন জোনকে তাদের নিজ নিজ এলাকার প্রয়োজনের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে বলেছে। কিন্তু তাতেও যথেষ্ট দেরি হয়ে গিয়েছে। ফলে আসন্ন রেল বাজেটে রাজ্যের কপালে কী জুটবে, তা নিয়ে এ বার বেশ ধন্দে রাজ্যের রেল কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement