অভিযুক্তকে না ধরে অভিযোগকারীকেই হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল বিধাননগর কমিশনারেটের বিরুদ্ধে!
লেক টাউন মোড়ে ট্রাফিক কনস্টেবলকে চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার তো দূর, ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি পুলিশ। উল্টে অভিযোগকারী কনস্টেবল তারাগতি বিশ্বাসকে নিয়েই এ বার টানাহেঁচড়া শুরু করলেন তদন্তকারীরা। রবিবার তারাগতিবাবুকে নিয়ে তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে যান। গত বুধবার সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল, তা ওই কনস্টেবলকে অভিনয় করে দেখাতে বলেন। তারাগতিবাবু অভিযোগে যা লিখেছেন, তার সঙ্গে এ দিনের বয়ান মিলিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
যে ভাবে প্রায় প্রতিদিনই তারাগতিবাবুকে হেনস্থা করা হচ্ছে, তাতে ক্ষুব্ধ পুলিশের নিচু তলা। লেক টাউন ট্রাফিক গার্ডের এক অফিসারের মন্তব্য, “তারাগতিবাবুকে রোজ রোজ হেনস্থা করার পিছনে কর্তাদের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনায় যাতে কোনও পুলিশকর্মী আর মন্ত্রী, সাংসদ, নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের না করেন, সেটাই পরোক্ষ ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
অভিযোগকারী কনস্টেবলের এক সহকর্মীর কথায়, “বার বার করে ওঁকে (তারাগতিবাবুকে) জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর কথায় অসঙ্গতি বার করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সেই অসঙ্গতি-র ছিদ্র ধরে উল্টে আমাদের সহকর্মীকেই ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।” প্রসূনবাবুকে কেন এক বারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না, প্রশ্ন নিচু তলার কর্মীদের। তাঁদের অভিযোগ, অভিযুক্তকে আড়াল করার জন্য সব রকমের চেষ্টা চলছে।
প্রসূনবাবু প্রথম থেকে বলে আসছেন তিনি তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। রবিবারও তিনি একই কথা জানান। প্রশ্ন উঠছে, প্রসূনবাবুকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না কেন? বিধাননগর কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসিপি) দেবাশিস ধর বলেন, ‘‘এই ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের কোনও ব্যাপার নেই। পুরো তদন্তই হবে জিজ্ঞাসাবাদের উপর ভিত্তি করে। সেই মতো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যখন দরকার পড়বে প্রসূনবাবুকেও ডাকা হবে।”
কবে সেই দরকারী সময় আসবে, সে ব্যাপারে দেবাশিসবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি।